দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সরকার বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
তবে কবে নাগাদ পরিস্থিতির উন্নত হতে পারে, সে ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এখন সবারই উচিত বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করা। আমরা নিজেদের অজান্তে প্রতিদিনই অনেক বেশি বিদ্যুৎ অপচয় করে ফেলি। একই সঙ্গে দিনকে দিন বাড়তে থাকা প্রযুক্তির পরিমাণ তো আছেই।
তাই বলে কি বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন না? অবশ্যই করবেন। তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সময় তা অপচয় হচ্ছে কি না সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিদ্যুৎ অপচয় রোধে কী করণীয়-
>> টিউব লাইটে ইলেকট্রিক্যাল ব্যালেষ্ট ব্যবহার না করে যদি ভালো মানের ইলেকট্রনিক্স ব্যালেষ্ট ব্যবহার করা যায়, তাহলে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে অনেক।
>> ফ্যানের রেগুলেটর যদি ইলেকট্রনিক্স রেগুলেটর হয় বিদ্যুৎ বিলের খরচ বেঁচে যাবে।
>> দেওয়ালের বিভিন্ন পয়েন্টে অযথা চার্জার লাগিয়ে রাখলেও কিছু বিদ্যুৎ খরচ হয়। দরকার না হলে প্লাগ খুলে ও সুইচ বন্ধ করে রাখুন।
>> প্রয়োজন ব্যাতীত ওভেন, ফ্যান, পিসি ইত্যাদি বন্ধ করে রাখুন।
>> বিদ্যুৎ সংযোগ খারাপ বা ত্রুটিপূর্ণ হলে আপনার বিদ্যুৎ খরচ বেশি হতে পারে। খারাপ সংযোগ সারিয়ে তুলুন।
>> পুরোনো লাইট বাল্ব বদলে এনার্জি সেভার বাল্ব ব্যবহার শুরু করুন। এগুলো ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে।
>> ওয়াশিং মেশিন শুধু বিদ্যুৎ নয় পানিরও অপচয় করে বেশি।
>> ড্রায়ারে বা ফ্যান ছেড়ে কাপড় শুকানোর বদলে বারান্দা বা ছাদে মেলে দিন।
>> রেফ্রিজারেটরের কয়েল বছরে অন্তত দু’বার পরিষ্কার করিয়ে নিন। এসির ফিল্টারও পরিষ্কার রাখুন। তাহলে বিদ্যুৎ খরচ কমবে।
>> বাড়িতে কাপড় ইস্ত্রি করা বন্ধ করে দিন। প্রয়োজন হলে দোকান থেকে ইস্ত্রি করিয়ে আনুন।
>> এসি ছেড়ে ঘুমাবেন না। প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টা এসি চালিয়ে তারপর বন্ধ করে দিন ও ফ্যান চালিয়ে নিন। কারণ ফ্যানের চেয়ে এসিতে বিদ্যুৎ অপচয় হয় বেশি।
>> পানি গরম করতে গিজার বা হিটার ব্যবহার কমিয়ে দিন।
>> হেয়ার ড্রায়ারের বদলে বাতাসেই শুকিয়ে নিন চুল। এতে করে বিদ্যুতের অপচয় কমবে।
>> ঘর থেকে বের হওয়ার সময় লাইট ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে দেওয়া অভ্যাস করুন।
>> ওভেন চালানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। বিশেষ করে মাইক্রোওয়েভ। রাইস কুকার, কারি কুকার ইত্যাদি একেবারেই বাধ্য না হলে ব্যবহার করবেন না।
>> নিয়ন গ্যাসীয় ডিম লাইট ও ইলেকনিং বেলাষ্ট ডিম লাইটে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। এভাবে ডিম লাইট থেকে ৫ ভাগের এক ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়।
>> ঘরের জানালাগুলো খুলে পর্দা সরিয়ে রাখুন। দিনের আলোয় কাজ করা অভ্যাস করুন।
>> বিভিন্ন উৎসব কিংবা অনুষ্ঠানে আলোকসজ্জা কমানোর ব্যবস্থা করুন। এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠানেও অতিরিক্ত আলোকসজ্জা এড়িয়ে চলুন।
বর্তমানে অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অযথা বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো, রাস্তার বাতি সময়মতো বন্ধ না করাসহ নানাভাবে আমরা প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের অপচয় করছি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত গৃহস্থালি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হওয়া।