ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে বুধবার (৬ জুলাই) থেকে বসছে কোরবানির পশুর হাট। এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাটে আসছে পশু। পাশাপাশি হাটগুলোতে জমে উঠেছে গো-খাদ্যের বাজারও।

সোমবার (৪ জুলাই) রাজধানীর শাহাজাহানপুর, মেরাদিয়া ও মেরুলবাড্ডা পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার আশেপাশে গো-খাদ্যের বিক্রির ভাসমান দোকান বসেছে। অস্থায়ী এসব বিক্রেতার কেউ ঢাকার, আবার কেউবা এসেছেন ঢাকার বাইর থেকে। শিশু, নারী, বৃদ্ধ সবাই এসব পশুখাদ্য ও কোরবানির বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রি করছেন।

এদিকে, ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার থেকে হাটে পশু বেচাকেনা শুরুর কথা থাকলেও এরই মধ্যে ক্রেতারা হাটে আসতে শুরু করেছেন। মূল হাটে কেনাবেচা না হলেও হাটের পাশে অস্থায়ীভাবে প্রচুর পশু রাখা আছে। এছাড়া পাড়ায়-মহল্লায়ও চোখে পড়ছে কোরবানির পশু। সেই সঙ্গে মহল্লাগুলোতেও গো-খাদ্যের দোকান বসেছে।

অস্থায়ী এসব গো-খাদ্যের বিক্রেতারা জানান, বছরের অন্যান্য সময়ে তারা অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকলেও কোরবানির ঈদের সময় তারা এ ব্যবসা করেন। তাতে কয়েকদিনের পরিশ্রমে অনেক ভালো অঙ্কের টাকা আয় করা যায়। হাটে পশু আসা শুরুর পর থেকে কোরবানির দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত চলে এ ব্যবসা।

ডিআইটি রোডের পাশে বাঁশের বাজারের ভেতর বসেছে গো-খাদ্যের বাজার। সেখানে সালাম নামের এক বিক্রেতা জানান, সিরাজগঞ্জ, রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে গো-খাদ্য সংগ্রহ করেন তিনি। তার দোকানে ছোট আকারের প্রতি গোছা খড় বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ টাকায় এগুলো সংগ্রহ করে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ বাবদ এ দামে বিক্রি করছেন তিনি।

বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটভেদে গমের ভুসি কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, চালের কুড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, খুদ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, কুড়া (তুষ) ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, মোটা লবণ (খোলা) ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জাতভেদে কাঁচা ঘাস প্রতি আটি ২০ থেকে ২৫ টাকা ও বিচালি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মেরুল বাড্ডার হাটে ভ্যানের ওপর কাঁচা ঘাস বিক্রি করছেন জামাল মিয়া। অন্য সময়ে তরকারি বিক্রি করলেও ঈদের এসময় পশুখাদ্য বিক্রি করেন। তিনি বলেন, গত বছরের থেকে এ বছর ঘাসের দাম অনেক বেশি।

শাহাজাহানপুর হাটে গো খাদ্য বিক্রেতা এনামুল হোসেন বলেন, গত বছরের থেকে সব খাদ্যের দাম এবার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। আগে যে গমের ভুসি কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ছিল, সেটা কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। খেসার ডালের ভুসি ২০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সব ধরনের পশুখাদ্যের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজিপ্রতি বেড়েছে।

পশুরহাটে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা নাজের হোসেন বলেন, এমনিতে বাজারে যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, তার থেকেও বেশি দামে সব অস্থায়ী দোকানে।

এদিকে, এসব হাটে পশুখাদ্যের পাশাপাশি কোরবানির জন্য পাওয়া যাচ্ছে হোগলার চাটাই ও খাটিয়াও। আকারভেদে প্রতি পিস চাটাই ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা ও খাটিয়া প্রতি পিস ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।