ডাক্তারের কাছে গেলে অনেক সময় তিনি রোগীর জিহ্বা পরীক্ষা করেন। এর কারণ হলো মানুষের জিহ্বা দেখেই চিকিৎসকরা ধারণা করতে পারেন, রোগী কোন অসুখে ভুগছেন। আপনার শরীরে গোপনে কোনো কঠিন রোগ বাসা বাঁধছে কি না তা জানান দেয় জিহ্বার রং।
জিহ্বা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে কিংবা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো জিহ্বার রং সাময়িকভাবে পরিবর্তন করতে পারে। তবে কোনো কারণ ছাড়াই জিহ্বার রঙে পরিবর্তন শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক জিহ্বার কোন কোন পরিবর্তন কোন রোগের ইঙ্গিত দেয়-
>> সাধারণত স্বাস্থ্যকর জিহ্বার রং হালকা গোলাপি হয়। আপনার জিহ্বার রংও যদি হালকা গোলাপি হয় ও উপরে পাতলা সাদা একটি আস্তরণ থাকে, তাহলে তা স্বাভাবিক।
>> আপনার জিহ্বার রং যদি সাদাটে হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন খুব সম্ভবত সেটি ডিহাইড্রেশন বা মুখ অপরিষ্কার থাকার কারণে কোনো সংক্রমণ ঘটেছে।
তবে পনিরের মতো জিভের মধ্যে সাদা স্তর পড়লে, তা লিউকোপ্লাকিয়ার মতো রোগের লক্ষণ হতে পারে। যার অন্যতম কারণ হলো ধূমপান। এছাড়া সাদা জিহ্বা ফ্লু’র ইঙ্গিতও দেয়।
>> ফ্যাকাশেরঙা জিহ্বা শরীরে পুষ্টির ঘাটতি নির্দেশ করে। যা ডায়েট পরিবর্তন করে সহজেই সমাধান করা যায়।
>> হলুদ জিভ হজমের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া আপনার লিভার বা পেটের সমস্যা থাকলেও জিহ্বার রং হলদেটে দেখাতে পারে।
>> বাদামিরঙা জিহ্বার কারণ হতে পারে অতিরিক্ত ক্যাফেইন সেবন করা। এছাড়া ধূমপান করলেও জিহ্বা বাদামি রঙের হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ধূমপায়ীদের জিহ্বায় স্থায়ীভাবে বাদামি আস্তরণ থাকতে পারে। এমনকি কালোও হয়ে যেতে পারে।
>> জিহ্বায় যদি ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণ ঘটে তাহলে তা কালো ও লোমশ প্রকৃতির হতে পারে।
>> অন্যদিকে যাদের জিহ্বার রং লাল, বুঝতে হবে তাদের শরীরে ফলিক অ্যাসিড বা ভিটামিন বি-১২ এর অভাব আছে। আপনার জিহ্বা অস্বাভাবিকভাবে লাল হতে পারে। আপনি যদি খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করেন, তাহলে জিহ্বায় মানচিত্রের মতো প্যাটার্নে লালচে দাগগুলো দেখতে পাবেন। একে জিওগ্রাফিক টাং বা ভৌগোলিক জিহ্বা বলা হয়।
>> অনেকেই হয়তো ভাববেন, জিহ্বার রং আবার নীল হয় নাকি! আসলে নীল ও বেগুনিরঙা জিহ্বা হৃদপিণ্ডের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। হয়তো আপনার হার্ট রক্ত সঠিকভাবে পাম্প করছে না বা আপনার রক্তে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে।
জিহ্বার রং নীলচে হলে দ্রুত ডাক্তার দেখান। এর পাশাপাশি জিহ্বা, দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্রিাশ করুন। যাতে মুখে কোনো ব্যাকটেরিয়া না থাকে। জিহ্বা পরিষ্কার করতে প্রতিদিন জিহ্বার স্ক্র্যাপার ব্যবহার করুন।