নরসিংদী সদর উপজেলায় সুজিত সুত্রধর (৫৩) নামের এক সাবেক ইউপি সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার ছেলে সুজনসহ দুজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (২২ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের কাঠবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুজিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন এবং হাজিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে মামলা মোকদ্দমার জের ধরে তার লোকজন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। অভিযুক্ত ইউসুফ খান পিন্টু হাজিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান। ২০০৬ সালে হাজিপুর ইউনিয়নের তৎকালীন বিএনপির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সরকার ও তার ভাই রিপন সরকারকে প্রকাশ্যে সুজিতের বাড়ির সামনে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেন পিন্টু এবং তার সমর্থকরা। জোড়া হত্যা মামলার ঘটনায় ইউসুফ খান পিন্টুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান সুজিত। এ সময় ছেলের সঙ্গে ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী দা, ছুরি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সুজিতের ওপর হামলা চালায়। তাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন। তার গলা কেটে দেন। এ সময় তার ছেলে ও দোকানের কর্মচারী এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করা হয়। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজিতকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ছেলে সুজন সুত্রধর অভিযোগ করে বলেন, ‘বাবার সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর সঙ্গে বিরোধ ছিল। বিরোধের জের ধরে চেয়ারম্যানের নামে বাবা একাধিক মামলা করেন। মামলার জেরে বাবার ওপর একাধিকবার হামলাও করেছে পিন্টু চেয়ারম্যান। মামলা তুলে না নিলে বাবাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়ে আসছিল।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন  বলেন, ‘সুজিত মেম্বার জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অন্যথায় আন্দোলনে নামবে বিএনপির নেতাকর্মীরা।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাজিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে তার ভাই মনির খান বলেন, ‘শত্রু কখনো শত্রুকে মারে না। বাজারে বার্নিশ মিস্ত্রিদের টাকা পয়সা নিয়ে সুজিতের ছেলে সুজনের সঙ্গে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে তারা সুজিত মেম্বারকে হত্যা করে।’

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী  বলেন, ঠিক কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো পরিষ্কার নই। তবে এ দুপক্ষের মধ্যেই মামলা মোকদ্দমা ছিল। হত্যার রহস্য ও আসামি গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।