পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সৃষ্ট হয়েছে তীব্র স্রোত। আর তীব্র স্রোতের কারণে নদী রক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
ফরিদপুরের পদ্মা নদী বেষ্টিত চরভদ্রাসনে চর হরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী এলাকায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মা নদীর লোহারটেক কোলের সংযোগ বাঁধেও দেখা দিয়েছে ভাঙন। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়টি।
সোমবার (২০ জুন) দুপুর থেকে ভাঙন দেখা যায়। ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে নদীর বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালুভর্তি জিও ব্যাগের ডাম্পিংকৃত প্রায় ১০ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদী ও লোহারটেক কোলের সংযোগ স্থলে তীব্র স্রোত দেখা দেয়। এরপরই বালুভর্তি ডাম্পিংকৃত জিওব্যাগ নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে।
লোহারটেক গ্রামের বাসিন্দা রহমত খান জাগো নিউজকে বলেন, বাঁধের কাজ শুরু হওয়াতে আমাদের আশা ছিল আর হয়তো ভাঙবে না। কিন্তু হঠাৎ ভাঙন দেখা দেওয়ার পর চিন্তায় আছি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় যাব।
একই গ্রামের শেখ হালিমের স্ত্রী রেবেকা খাতুন (৫০) বলেন, ২০ বছর ধরে রাস্তার পাশে কোনোমতে ঘর করে আছি। অল্প আয়ের সংসারে মাথা গোঁজার একটু জায়গা কিনতে পারি নাই। পদ্মায় এইটুকুও কেড়ে নিলে আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না।
সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, হঠাৎ পদ্মায় পানি বেড়ে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙন বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ের ১৩৫ জন শিক্ষার্থীর পড়ালেখা চলমান রাখতে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
চর হরিরামপুর ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার দুপুরে জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এ এলাকায় একটি প্রাইমারি স্কুল ও প্রায় সাড়ে তিনশো পরিবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙনরোধে কাজ চলছে। বালু ভর্তি জিও ব্যাগের ডাম্পিং করা হচ্ছে। একেকটি বালুভর্তি জিও ব্যাগের ওজন প্রায় তিনশ মণ। সেটাও ফেলার সঙ্গে সঙ্গে নিচের দিকে দেবে যাচ্ছে। কাজের পরিমাণ ও গতি বাড়াতে হবে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ভাঙনরোধে কাজ চলছে। সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে দুইশ মিটার স্থায়ী বাঁধের কাজটি পুরোপুরি সম্পন্ন করা যায়নি। এবছর পূর্ব সতর্কতামূলক প্রকল্প হিসেবে এলাকা ঢালু করে তার উপর জিও ব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছে। ওই স্থানে ভাঙনের খবর তিনি পেয়েছেন। পদ্মা নদীর ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।