গণফোরামের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কর ফাঁকির বিষয়ে দেওয়া আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে করের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া নোটিশের কার্যক্রমের ওপর স্থিতিবস্থা (স্টেটাসকো) দিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ড. কামালের আইনজীবী রমজান শিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে এদিন ড. কামালের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট রমজান আলী শিকদার, ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান, আইনজীবী ড. মো. শরীফ ভূইয়া, আইনজীবী তানিম হোসেন শাওন, নাজিম হুদা ও কাজী আতাউল–আল-ওসমান।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।

কর ফাঁকির বিষয়ে আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটেসের পক্ষে করা রিট আবেদনের বিষয়ে গত ১৯ জুন শুনানি শেষ হয়। এর পরে ওইদিন এ বিষয়ে আদেশের জন্য মঙ্গলবার (২১ জুন) দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এরআগে রিট আবেদনের বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ এ দিন ঠিক করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানি হয়।

গত ১৪ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি তালিকা থেকে বাদ দেন। পরে ওই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট এ বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়। তারও আগে আয়কর নিয়ে কর আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এ রিট আবেদনটি করেন ড. কামাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।

এর আগে গত ৫ জুন শুনানির জন্য রিটটি কার্যতালিকায় আসলেও রিটকারীর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১২ জুন দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট। ওইদিন শুনানি না করে ১৪ জুন দিন ঠিক করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানির জন্য ওঠে।

রিট আবেদনে বলা হয়, কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি চার লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে। কিন্তু ওই অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তার নামে ২০ কোটি ১১ লাখ চার হাজার ২১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়ে ছয় কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করে।

২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজস্ব বোর্ডের এক ডেপুটি কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করেন কামাল হোসেন। ওই আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন খারিজ করে দেওয়া হয়।

এরপর যুগ্ম কমিশনারের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। আপিল ট্রাইব্যুনাল তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।