অনেকেই হয়তো ভাবছেন, বাবার সঙ্গে আবার সম্পর্ক ভালো করার কী আছে! আসলে এই কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই দৌড়াচ্ছেন দিন-রাত। ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে অনেকেই বাবা-মাকে তেমন সময় দিতে পারেন না।

মায়ের সঙ্গে দিনে খানিকটা সময় কাটালেও বাবা যদি কর্মজীবী হন তাহলে তাকে সময় দিতে পারেন না অনেকেই। এমনকি একই পরিবারে থেকেই অনেক সময় বাবার সঙ্গে ছেলে-মেয়ের ঠিকভাবে দেখা বা কথাও হয় না।

আপনার ক্ষেত্রেও যদি এমনকি হয় তাহলে বুঝবেন বাবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আরও ভালো করতে হবে। এজন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন-

>> দৈনিক বাবার সঙ্গে কিছু সময় কাটান। প্রতিদিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করুন তার সঙ্গে। বিশ্ব সম্পর্কে, আপনার অফিস, স্কুল-কলেজসহ বন্ধুদের বিষয়ে কিংবা নিজ পরিবারের হালচাল নিয়েও বাবার সঙ্গে কথা বলুন।

>> ছুটির দিনে বা বাবাকে খুশি করতে তার পছন্দের খাবার রান্না করুন। শুধু যে মেয়েরাই বাবার জন্য রান্না করবেন তা কিন্তু নয়, ছেলেরাও চাইলে বাবাকে খুশি করতে রাঁধতে পারেন। তারপর পরিবারসহ একসঙ্গে খাবার খেতে বসুন।

>> জীবনের ছোট-বড় বিভিন্ন বিষয়ে বাবার পরামর্শ নিন। অনেকেই পরিবার কিংবা বাবার কাছে জীবনের বিভিন্ন বিষয় লুকিয়ে রাখেন।

তবে সবারই উচিত বাবা-মায়ের সঙ্গে সব বিষয় ভাগাভাগি করে নিন। দেখবেন তিনি আপনাকে এমন সমাধান দেবেন যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করবে।

>> বাবার জন্য সময় বের করুন। এখন সবাই অবসরেও স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এসব বাদ দিয়ে বরং পরিবারকে সময় দিন।

বিশেষ করে বাবার সঙ্গে আড্ডা দিন। শুধু আপনিই নয় বরং আপনার স্ত্রী বা স্বামী-সন্তানকে নিয়ে সবাই মিলে কথা বলুন ও আনন্দ করুন।

>> বয়স বাড়তেই মানুষ আরও অলস হয়ে পড়েন। তখন কর্মক্ষমতাও কমতে শুরু করে। বাবার শরীরের যত্ন নিতে তাকে সঙ্গে নিয়ে সকালে হাঁটতে বের হন কিংবা ব্যায়াম করুন।

>> বাবাকে প্রায়ই উপহার দিন। শুধু বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে নয়, বরং যে কোনো সময়ই তাকে ছোট-বড় কিছু না কিছু জিনিস উপহার দিন।

>> বাবা কখনো তার নিজের মতো যত্ন নেওয়ার কথা মনে করবেন না, বিশেষ করে যখন তার কাঁধে অনেক দায়িত্ব থাকে। তাই বাবার শরীরের খোঁজ নিন। তার যে কোনো অসুবিধা বা শারীরিক সমস্যায় হেলাফেলা করবেন না।

>> অনেকেই হয়তো জানেন না তার বাবার পছন্দের বিষয় কী! তবে সবারই তা জানা উচিত। আর বাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো তার পছন্দের জিনিস নিয়ে কথা বলা।

>> নিজের ব্যক্তিগত জীবন থেকে বাবাকে কখনো দূরে রাখবেন না। এক বাড়িতে থাকলেও অনেকেই বাবা-মাকে নিজের জীবনে ঢুকতে দেন না।

এটি একদমই ভুল কাজ। নিজের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কেও বাবার সঙ্গে কথা বলুন। এমনকি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বাবাকে রাখুন।

>> বাবা আর সন্তানের মধ্যে কোনো গোপনীয়তা রাখা উচিত নয়। আপনি যদি মনে করেন, কোনো বিষয় নিয়ে আপনার বাবা বিতর্ক করবেন বা অনুমতি দেবেন না বলে আপনি তার সঙ্গে কিছু শেয়ার করবেন না!

এই ভুল কখনো করবেন না। কারণ সন্তান খারাপ কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বাবা-মা শাসন করবেনই। তাই বাবা বকা দিলেও তার মুখে মুখে তর্ক করবেন না।