দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর বন্যা মধ্যাঞ্চলেও ছড়াতে পারে। তবে রংপুর (উত্তরাঞ্চল) ও সিলেটের (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি আগামী সপ্তাহ (জুনের চতুর্থ সপ্তাহ) থেকে উন্নতির দিকে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

শুক্রবার (১৭ জুন) রাতে বন্যা পূর্বাভাস সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এর ফলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় ৭ থেকে ১০ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়া তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় ৫ থেকে ৭ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তীতে জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে বৃষ্টিপাত কমে ওই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

জুন মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে মধ্যাঞ্চলের রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে বৃষ্টিপাত কমে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১০টি নদীর পানি ১৩টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছিলো পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এসব অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমের সিলেট অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। ঘর-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাটসহ ডুবে গেছে বিভিন্ন স্থাপনা।

বন্যার কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩টা থেকে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এছাড়া শুক্রবার দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শনিবার সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে সিলেট শহর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।