পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনায় আসামি ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ মো. শামিম হোসেন মৃধাকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৮)।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দিনগত রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গত ১১ জুন ভান্ডারিয়ায় একস্কুল ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ শামিম ঢাকায় পালিয়ে এসে আত্মগোপনে চলে যান। আসামি এর আগেও একাধিক ধর্ষণ ও যৌন নির‌্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

শুক্রবার (১৭ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ভান্ডারিয়ায় আলোচিত ধর্ষণকাণ্ডের পর র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় ধর্ষক মো. শামিম হোসেন মৃধাকে গ্রেফতার করা হয়। শামিম ওই ধর্ষণের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে নিজের দায় স্বীকার করেছেন।

ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, ভান্ডারিয়ায় স্কুলপড়ুয়া ওই ছাত্রীকে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান শামিম। এরপরই তিনি ঢাকায় এসে গা ঢাকা দেন।

গ্রেফতার শামিমকে ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ভান্ডারিয়ার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গভীর রাতে ঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণের চেষ্টা করেন শামিম। ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর একই এলাকার মাদরাসাছাত্রীকে রামদা দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। একইভাবে ২০২১ সালে ১০ অক্টোবর আরেক মাদরাসাছাত্রীকে যৌনপীড়ন করেন তিনি।

এসব ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় বিভিন্ন সময় শামিমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এছাড়া, আরও কয়েকটি ধর্ষণকাণ্ডে তিনি জড়িত বলে জানা যায়। কিন্তু ভিকটিমরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর‌্যাদাহানির ভয়ে মামলা করা থেকে বিরত থাকেন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, শামিম রাজধানীর বাবু বাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি এবং প্রাইভেটকারচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৬ বছর বয়সে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচার মাধ্যমে অপরাধ জগতে জড়ান তিনি। বিভিন্ন এলাকায় নারী নির‌্যাতন ও ধর্ষণসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া ছিল তার কৌশল।

তিনি জানান, এছাড়া গ্রেফতার এড়াতে শামিম এক জায়গায় বেশিদিন অবস্থান করতেন না। তার নামে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা ও মাদকসহ ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। এর আগে ধর্ষণ ও অন্যান মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে চার-পাঁচবার কারাভোগও করেছেন। শামিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানার মামলায় ৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

গ্রেফতার শামিম ‘বিকৃত মানসিকতার’ বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।