টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এক মাসের মধ্যে ফের বন্যার কবলে পড়েছেন সিলেটের লক্ষাধিক মানুষ। নগরের প্রায় ৫০টি এলাকার বাসা-বাড়ি ও সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ঘাসিটুলা, কলাপাড়া, শামীমাবাদ, ডহর, তালতলা, কালিঘাট, সোবহানীঘাট, শাহজালাল উপশহর, তেররতন, হবিনন্দি, সাদিপুর, বোরহানবাগ, শিবগঞ্জ এলাকার রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গেছে। বেশ কিছু বাসায় পানি ঢুকে পড়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেক পরিবার।এদিকে ফের বন্যা দেখা দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। প্রয়োজন দেখা দিলেই সময়মতো খোলা হবে হবে আশ্রয়কেন্দ্র।

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরের বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তা-ঘাট, বাসা-বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আশ্রয়কেন্দ্র খোলাসহ বন্যা পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে নগর ভবনে সভা চলছে। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি জানান, বন্যা দেখা দেওয়া এলাকাগুলোতে এখনও বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হয়নি। এমন পরিস্থিতি হলে সিসিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয় থেকে পাঠানো পানির স্তরসংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পৌনে ১টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবারের তুলনায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি কমেছে দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর সিলেট সদর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।

পানি বাড়ছে কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও। বৃহস্পতিবার দুপুর দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার বিকেল ৩টায় কুশিয়ারার এ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এছাড়া একই সময়ে সিলেটের জৈন্তাপুরে সারি নদী বিপৎসীমার দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবারের তুলনায় সারি নদীর এ পয়েন্টে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি কমেছে দশমিক ৫ সেন্টিমিটার।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী জানান, আরও পাঁচদিন সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাছাড়াও সিলেটের গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজারের উজানে ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার কারণে পাহাড়ি ঢল নামছে।