বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, রাজপথে স্লোগান দিতাম…। তখন ১০ টাকা তেলের দাম বাড়লে বিরাট দাম বেড়ে যেত। তখন আমরা বলতাম ১০ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাবো। এখন বলতে চাই, পদ্মা ব্রীজের টোল ও পদ্মা ব্রীজ দিয়ে স্বর্গে যাবো।

শুক্রবার (১০ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল, আজকের সরকার অনির্বাচিত সরকার। সরকার গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাজেট ঘোষণা দিয়েছে। এই বাজেট জনগণের জন্য নয়। এই বাজেট জনগণের গণশত্রু হিসেবে ঘোষণা হয়েছে।

‘শিল্প কারখানায় যে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, সেই গ্যাসের দামও বাড়বে। এভাবে প্রতিটা জিনিসের দাম রাতারাতি বাড়তে থাকবে। এই বাজেট পাস করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অর্থাৎ পুলিশ বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য।’

‘আমাদের জনগণকে বুঝাতে হবে, এ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে চলছে। সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ৩০ হাজার কোটি টাকার পর্যায়ে নিয়েছে। বাকি সব টাকা চুরি করেছে। আমাদের রুমিন ফারহানা (বিএনপির সংসদ সদস্য) সংসদে গতকাল খুব কথা ভালো বলেছে যে, পদ্মা ব্রীজ সোনা দিয়ে মোড়ানো….।’

‘এই সরকারের কবল থেকে আমাদের অবশ্যই মুক্তি পেতে হবে। আর এই মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে পছন্দ করে নি। সরকারকে বলছি, এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন।’

সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বাংলাদেশে সবকিছুর দাম বাড়ে, শুধু মূল্য কমেছে সাধারণ মানুষের। আওয়ামী লীগের আমলে যারা প্রতিবাদ করে, তাদের জীবনের শুধু দাম কমে।

এ সময় তথ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে আলাল বলেন, তিনি বলেছেন তারেক রহমান লন্ডন থেকে টেলিফোন করে ব্যবসায়ীদেরকে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। আর এজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে। তারেক রহমানের যদি এতই ক্ষমতা থাকতো, তাহলে তিনি লন্ডনে থাকতেন না। আপনারা যদি মনে করেন, তারেক রহমানের অনেক ক্ষমতা, তাহলে ভালোভাবে দেশ চালানোর জন্য তার কাছ থেকে পরামর্শ নেন।

তিনি আরও বলেন, এই যে প্রতিবাদ সভা হচ্ছে। আস্তে আস্তে দেশের জনগণ রাস্তায় নামা শুরু করেছে। আগে একের পর এক পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন একইভাবে আন্দোলনের স্প্যান বসানো হচ্ছে। যেদিন এই স্প্যান বসানো শেষ হবে, সেদিন আওয়ামী লীগকে নরকে পাঠানো হবে।

আজকের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। এতে বক্তৃতা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, ইকবাল শ্যামল, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল ও মহিলাদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।