ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ঐতিহাসিক’ ভুল করেছেন, কিন্তু এজন্য রাশিয়াকে অপমান করা উচিত হবে না বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
তার এই মন্তব্য যে কিয়েভ একেবারেই সমর্থন করেনি, শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা।
শনিবারের টুইটবার্তায় কুলেবা বলেন, ‘রাশিয়া নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্যের মাধ্যমে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আসলে ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশ, যারা এ যুদ্ধের বিপক্ষে— তাদের অপমান করেছেন।’
‘রাশিয়াকে আলাদা করে অপমান করার কিছু নেই, কারণ রাশিয়া নিজেই নিজেকে অপমান করেছে। এখন আমাদের মনযোগ দেওয়া উচিত— কীভাবে রাশিয়াকে তার নিজের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া যায়।’
সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সেখানে ইউক্রেনে অভিযান শুরুর আগে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি রাশিয়া ইস্যুতে ইউরোপের নীতি কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘(বৈঠকে) আমি তাকে বলেছিলাম, যদি তিনি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন— তাহলে সেটি হবে তার জনগণের জন্য, তার নিজের জন্য ও ইতিহাসের জন্য একটি ঐতিহাসিক ভুল। আমি এখনও তা মনে করি।’
‘তবে আমি এটাও মনে করি যে, পুতিনের ঐতিহাসিক এই ভুলের জন্য রাশিয়াকে অপমান করা আমাদের কখনও উচিত হবে না। কারণ, যুদ্ধ একদিন শেষ হবে এবং আমাদের সবাইকে আবার কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে যেতে হবে।’
শনিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশের পর থেকে অবশ্য ইউক্রেনের পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপ ও কয়েকটি বাল্টিক দেশ অবশ্য ম্যাক্রোঁর এ অবস্থানের সমালোচনা করে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ম্যাক্রোঁর এ অবস্থানের কারণে আলোচনার টেবিলে পুতিনের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার ১০১ তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর।