ডিউটি শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাবেন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে কর্মরত করণ কারণ। তবে ডিপোতে আগুন লাগার খবর এখনো পৌঁছায়নি তার কাছে। এমন সময় তার কক্ষের অন্য একজনের বাড়ি থেকে ফোন করে জানায়, দেখা যাচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের খবর।
করণ কারণ বলেন, আমার ডিউটি শেষ হয়েছিল রাত ৮টায়। ডিপোতে আগুন লাগার খবর শুনে দেখতে বের হয়েছিলাম। এমন সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের স্থান থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে ছিলাম। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই পাশের পুকুরে লাফ দেই। ফলে বিস্ফোরণের প্রভাব থেকে অনেকটাই বেঁচে যাই।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের বেডে শুয়ে এভাবেই বিস্ফোরণের সময়কার ঘটনা জানাচ্ছিলেন করণ কারণ। বিভীষিকাময় সময়টাকে বোঝাতে কখনওবা উঠে বসছিলেন তিনি। তবে চোখ মেলে রাখতে পারছিলেন না বেশিক্ষণ। বিস্ফোরণের রাসায়নিকের প্রভাবে এখনও চোখ থেকে পানি ঝরছে তার।
করণ কারণের ছেলে প্রান্ত কারণ বলেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকেই বাবা অন্য একজনের ফোন থেকে আমাকে কল করে। তখনকার পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এতো দূর থেকেও কেমিক্যালের প্রভাবে বাবার চোখে সমস্যা হয়েছে। অন্যদের তুলনায় আমার বাবা কমই আহত হয়েছেন।
সারি সারি বেডিগুলোতে শুয়ে এরকম অনেকেই এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন চমেক হাসপাতালে। কারো পুড়ে গেছে শরীরের অর্ধেকটা, কারো বেশি, কারো বা একটু কম।
এর আগে শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।