যখন যা কিছু দরকার তখন তা খুব সহজেই মেলে অনলাইনে। কেনাকাটা করতে এখন আর কেউ রোদ, ঝড়, বৃষ্টি কিংবা ভিড়ের মধ্যে যান না। ঘরে বসেই যে কোনো পণ্য অর্ডার দিয়ে দরজায় গিয়ে দাড়ালেই তা হাতে পেয়ে যান!

অনলাইনে কেনাকাটার যেমন ভালো দিক আছে তেমন এর খারাপ দিকও আছে। এর অন্যতম খারাপ দিক হলো অতিরিক্ত খরচ। আবার এই কেনাকাটার আসক্তিও মানুষকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলতে পারে।

এখন অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে ছড়াছড়ি। ফলে অনলাইনে ঢুকলেই এটা সেটা দেখে কেনার প্রবণতাও বাড়ে। অনেকে তো অনলাইন কেনাকাটায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে সাইকোলজি টুডে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে কেনাকাটায় আসক্তি বাড়তে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা ইত্যাদি।

অনেকেই হয়তো বুঝতে পারেন যে, তারা কেনাকাটায় আসক্ত তবে তা এড়াতে পারেন না। তবে এই আসক্তি কাটানো কিছু উপায় আছে। জেনে নিন তেমনই ৫ উপায়-

>> ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে যেসব শপিং পেইজে লাইক দিয়ে রেখেছেন সেগুলো আনলাইক করে দিন। যদি কোনো শপিং সাইটের অ্যাপে সাবস্ক্রাইব করা থাকে সেগুলো আনসাবস্ক্রাইব ও আনফলো করে দিন।

এতে তাদের কোনো নোটিফিকেশন আর আপনি পাবেন না। এমনকি তাদের বিজ্ঞাপনও আর আপনাকে হোমপেইজে ঘোরাঘুরি করবে না। ফলে কেনাকাটার প্রবণতাও কমবে।

>> মাসে আপনার হাত খরচ কত আর কেনাকাটার খরচ কত তা নির্ধারণ করুন। নির্দিষ্ট টাকা ব্যতীত আর কোনো খাতে অর্থ ব্যয় করবেন না বলে শপথ করুন।

প্রয়োজনে দৈনিক কোন কোন খাতে অর্থ ব্যয় করছেন তা দিন শেষে লিখে রাখুন। তাহলেই হিসাব থাকবে যে আপনি কত খরচ করছেন আর আপনার কতটা করা উচিত।

>> ক্রেডিট কার্ড কম ব্যবহার করুন। অনেকেই বিভিন্ন শপিং সাইটে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। ফলে ঠিকভাবে হিসাব রাখতে পারেন না!

এ কারণে নগদ অর্থ দিয়ে কেনাকাটার চেষ্টা করুন। তাহলেই বুঝবেন ঠিক কতটা খরচ হচ্ছে আর আপনার কাছে কত টাকা অবশিষ্ট আছে।

>> আপনি যে অর্থ অহেতুক কেনাকাটায় খরচ করছেন সেগুলো বিভিন্ন খাতের জন্য জমাতে পারেন। যেমন- কোথাও ভ্রমণে জন্য কিংবা কাউকে বড় কিছু উপহার দিতে কিংবা সংসারে অবদান রাখতে এমনকি গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করার জন্য আলাদাভাবে একটু একটু সঞ্চয় করতে পারেন। এই অভ্যাস আপনার দায়িত্ববোধ আরও বাড়াবে এমনকি অপব্যয় থেকেও আপনাকে বাঁচাবে।

>> কখনো কখনো আমরা নিজেরা বিভিন্ন সমস্যার মোকাবেলা করতে পারি না। সেক্ষেত্রে পরিবার বা বন্ধুদের সহযোগিতা নিন। আপনার আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন মনে হলে অবশ্যই কারও সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করুন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

মাত্র কয়েকটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই আপনি অনলাইন শপিং আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এর পাশাপাশি যে সময়টুকিু আপনি অনলাইকে কাটান তখন বই পড়া কিংবা পরিবারকে সময় দেওয়ার মতো ছোট ছোট অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এতে আপনি মানসিকভাবেও সুস্থ থাকবেন।