টেক্সাসের স্কুলে প্রাণঘাতী হামলায় ১৮ শিশু প্রাণ হারানোর এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) লুইজিয়ানায় একটি হাইস্কুলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলে গুলিতে এক নারী নিহত এবং আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিউ অরলিন্স পুলিশ বিভাগের প্রধান ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট ক্রিস্টোফার গুডলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর সিএনএনের।

জানা গেছে, এদিন নিউ অরলিন্সের জেভিয়ার ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে মরিস জেফ কমিউনিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টা) জেভিয়ার ইউনিভার্সিটি কনভোকেশন সেন্টারের পার্কিং লটে গুলির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়, যাদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরে বয়স্ক সেই নারী মারা যান।

ক্রিস্টোফার গুডলি বলেছেন, সম্ভবত দুই নারীর মধ্যে লড়াই হয়েছিল। এরপর তারা অস্ত্র বের করেন ও গুলির ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এক সন্দেহভাজন ও তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো তদন্ত চলছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

নিউ অরলিন্সের মেয়র লাতোয়া ক্যানট্রেল ওই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেছিলেন। কিন্তু গুলির ঘটনার আগেই সেখান থেকে চলে যান। ক্যানট্রেল পরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, বন্দুক সহিংসতা আমাদের শহরটাকে জর্জরিত করছে।

এর আগে, গত ২৪ মে টেক্সাসের উভালদে এলাকায় একটি এলিমেন্টারি একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ২১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ১৮ জনই শিশু। যুক্তরাষ্ট্রে গত ১০ বছরের মধ্যে স্কুলে সংঘটিত এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত বন্দুক হামলা ও তাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও সেখানে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন এখনো কঠোর করা যায়নি। মার্কিন কংগ্রেসে এ বিষয়ে কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে সেগুলো।

গত ১৪ মে নিউইয়র্কে একটি মুদি দোকানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করে ১৮ বছরের এক কিশোর। নিজেকে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী ঘোষণা দিয়ে আফ্রিকান-আমেরিকান অধ্যুষিত এলাকাটিতে হামলা চালায় সে।

এর একদিন পরেই ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি চার্চের দরজায় দাঁড়িয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় এক বন্দুকধারী। এতে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ২০২০ সালে দেশটিতে ১৯ হাজার ৩৫০টি বন্দুকহামলার ঘটনা ঘটেছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি।