মানহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় ১১ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাজ করছে। এর মধ্যে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদের কারণে যাতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত না হয় সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি।

বুধবার (১ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানহীন ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। আমরা কাউকে হেনস্তা করতে চাচ্ছি না। যারা ভালো করছেন তাদের সহযোগিতা করবো। কিন্তু যারা অন্যায় করবেন আমরা তাদের সঙ্গে নেই। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্বাস্থ্যসেবা শুধুমাত্র সরকারিতেই থাকে না, প্রায় অর্ধেক জনগণ সেবা নেন বেসরকারিতে। কোভিড মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোও অনেক ভূমিকা রেখেছে।

করোনা নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদানের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে মন্তব্য করে জাহিদ মালেক বলেন, দেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো আট থেকে ১০ কোটি মানুষ বুস্টার ডোজের বাইরে। আগামী ৪ জুন থেকে বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন শুরু হবে। বুস্টার ডোজ নিয়ে আমরা আরও সুরক্ষিত থাকবো।

করোনার সময়ে অসংক্রামক রোগ নিয়ে কাজ করতে পারিনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখন অসংক্রামক রোগ নিগে কাজ করছি। অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। দেশে অসংক্রামক রোগে ৬৭ ভাগের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। তাই এটাতে গুরুত্ব দিতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার শুরুতে হাতেগোনা কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ছিল। বর্তমানে ২০টির মতো ইনস্টিটিউট আছে। তখন কত শয্যা ছিল? বর্তমানে ৬০ হাজার শয্যা। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক, পরিবার পরিকল্পনা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভূমিকা অনেক বেশি। প্রতিটি উপজেলায় এখন ৫০টি শয্যা রয়েছে।

বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবায় জনবল অনেক বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে তিন লাখ জনবল নিয়ে কাজ করছে। জনবল বৃদ্ধি করে আমরা সেবার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। বর্তমানে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, আগে যেখানে একটিও ছিল না। অনেক হাসপাতাল এখন ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় এসেছে। আগামীতে সব হাসপাতালকেই এর আওতায় আনতে হবে। সফলতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সক্ষমতায় বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় আমরা পঞ্চম ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম হয়েছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।