বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধভাবে মজুত ঠেকাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অভিযান চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আভিযানিক টিম। অভিযানের খবর পেয়ে চাল ব্যবসায়ীদের অনেকে দোকানপাট ফেলে পালিয়েছেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মর্জিনা আক্তার বুধবার (১ জুন) দুপুরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, কারওরান বাজারে বিভিন্ন চালের আড়তে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সে গরমিল পাওয়া গেছে। গরমিল রয়েছে চালের মজুতেও।
এদিন দুপুর ১২টার পর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে চালের আড়তগুলোতে অভিযান শুরু হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মর্জিনা আক্তারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে দোকানে যাচ্ছি, কোনোটারই লাইসেন্স ঠিক পাওয়া যাচ্ছে না। চালের মজুতের হিসেবেও গরমিল রয়েছে। আমরা অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী দোকান ফেলে চলে গেছে।
এসময় চাল ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স আছে কি না, অনুমোদনের চেয়ে বেশি চাল মজুত আছে কি না, ফুড গ্রেইন লাইসেন্স যাচাই, খাদ্যশস্যের কেনা-বেচার রশিদ, মিল গেটে কী মূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে, খুচরা-পাইকারি বিক্রেতার ক্যাশমেমো, খুচরা মূল্যতালিকা প্রদর্শন- এসব বিষয় যাচাই করতে দেখা যায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আভিযানিক টিমকে।
অভিযানে আড়ত মালিকেরা কোনো ধরনের সহযোগিতা করছে না অভিযোগ করে মর্জিনা আক্তার বলেন, আমরা অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়ে গেছে। এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পরবর্তীসময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযান চলছে। তবে চালের বাজারে অস্থিরতার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বড় বড় মালিকরা মজুত করছেন।
তবে সেই বড় বড় মজুতদার মালিক কারা তা খুঁজে বের করতে ঊর্ধ্বতনদের জানানো হবে বলে জানান মর্জিনা আক্তার। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কারওয়ান বাজার মনিটর করতে এসেছিলেন বলেন জানান উপ-সচিব।
একইদিন দুপুরে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে শাহ স্মৃতি মার্কেটের পাইকারি চালের আড়তে অভিযান শুরু করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানের শুরুতেই তাইয়্যেবা রাইস এজেন্সিতে অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, যেসব চালের দাম বেশি সেগুলোর কোনো মূল্যতালিকা নেই। দোকান মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর চালের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত আটটি টিম গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
ওইদিন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান শুরুর খবর পেয়ে পালিয়ে যান রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের চাল ব্যবসায়ীরা। জরিমানা এড়াতে তারা এ পন্থা বেছে নেন বলে জানান কৃষি মার্কেটের পাইকারি চালবাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু।
এদিকে অবৈধভাবে চালের মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
বোরোর ভরা মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে গত সোমবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে প্রয়োজনে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানি করবে সরকার।