আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনে জয় পেয়েছে সরকার সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ অর্থাৎ আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা। সংস্থাটির নির্বাচন হওয়া ১৪ পদের মধ্যে ১০ পদেই জয় পেয়েছেন তারা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা। সাঈদ আহমেদ রাজা প্রয়াত আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারের ছেলে। সারাদেশে গরীবের আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর তিনি মারা যান।
এবারের নির্বাচনে সাঈদ আহমেদ রাজা ১৭ হাজার ৪৩৩ ভোট পেয়েছেন, যা সর্বোচ্চ।
বার কাউন্সিলের সাতটি সাধারণ আসনের মধ্যে চারটি এবং সাতটি গ্রুপ আসনের ৬টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামীপন্থিরা। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের নীল প্যানেল সাধারণ তিনটি এবং একটি গ্রুপ আসনে জয় পেয়েছে।
রোববার (২৯ মে) দিনগত রাত ৩টার দিকে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বার কাউন্সিলের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভোট গণনা শুরু হয়। ভোর রাতে গণনা শেষ করে ফলাফল ঘোষণা হয়।
সরকার সমর্থকদের সাদা প্যানেল থেকে সাধারণ আসনে বিজয়ী অন্যরা হলেন- অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান (১৭ হাজার ৯৩ ভোট), অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বাদল (১৬ হাজার ৮৪৪ ভোট) এবং অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম বুদু (১৫ হাজার ২৭ ভোট)।
এ প্যানেলের গ্রুপ আসনে বিজয়ী ৬ প্রার্থী হলেন- ঢাকা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি (গ্রুপ-এ) আবদুল বাতেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-বি) মো. জালাল উদ্দিন খান, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-ডি) এ এফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-ই) আনিছ উদ্দিন আহমেদ সহিদ, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-এফ) মো. একরামুল হক এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-জি) মো. আব্দুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন।
সাধারণ আসনে বিজয়ী বিএনপিপন্থি তিন প্রার্থী হলেন- ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন (১৬ হাজার ৮১১ ভোট), ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল (১৫ হাজার ৯৬৫ ভোট) ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন (১৪ হাজার ৭৯৬ ভোট)। এ প্যানেল থেকে গ্রুপ আসনে একমাত্র বিজয়ী প্রার্থী হচ্ছেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-সি) এ এস এম বদরুল আনোয়ার।
এর আগে গত ২৫ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সারাদেশের ৯৩ কেন্দ্রের ১৬৪ বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
পরে বার কাউন্সিলের এক নোটিশে ২৯ মে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করার কথা জানানো হয়। নির্বাচনে সাধারণ সাতটি আসনে ৩৫ জন প্রার্থী এবং গ্রুপ ভিত্তিক সাত আসনে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বার কাউন্সিলের ১৫ পদের ১৪ পদেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পদাধিকার বলে অ্যাটর্নি জেনারেল হন বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান।
এর আগের নির্বাচনে (২০১৮) ১৪ আসনের ১২টিতে জয়ী হয়েছিল সরকার সমর্থকদের সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। অন্যদিকে বিএনপি জোটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল পেয়েছিল মাত্র দুটি আসন।