চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজিস্টদের মতে, প্রতিদিন প্রায় ৯০-১০০টি চুল পড়া স্বভাবিক। কখনো কখনো ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত চিন্তাভাবনার কারণে বেশি চুল পড়তে পারে। আবার বংশগত বহুবিধ সমস্যার কারণেও অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে।

এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত মানসিক চাপ, চুলে ভুল প্রসাধনী ব্যবহার, মাথার ত্বকের সংক্রমণ, হরমোনের প্রভাব পিসিওএস বা ফাইব্রয়েড, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, ক্যানসারের চিকিৎসা, বিপাকে সমস্যা ইত্যাদি কারণেও চুল পড়া বাড়তে পারে। এর মধ্যে ৭টি কারণে বেশিরভাগ মানুষই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। তবে বিষয়গুলো অনেকেরও অজানা। জেনে নিন কী কী-

>> বেশিরভাগ নারীরাই চুল স্ট্রেট বা কার্ল করাতে অতিরিক্ত তাপ দেন। এছাড়া দৈনিক চুলে হিট দেওয়ার কারণে চুলের কেরাটিনের ক্ষতি হয়। ফলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়।

>> চুল খুব বেশি আঁটসাঁট করে বাঁধার কারণে এর ফলিকলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো এটি ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়াও হতে পারে, এ সমস্যার কারণে নতুন চুল গজায় না। তাই চুলের স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।

>> মাথার ত্বকে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও গরম পানি অনেকেই ব্যবহার করেন। তবে এগুলো একেবারেই ভুল কাজ। মাথার ত্বকে সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখা যায়।

আবার অত্যধিক শ্যাম্পু করাও চুলের জন্য ক্ষতিকর। এতে মাথার ত্বকে বেশি তেল তৈরি হয়, যা চুল পড়ার সমস্যা বাড়ায়।

>> শুধু প্রয়োজন হলেই চুল আঁচড়ান। অতিরিক্ত চুল আঁচড়াবেন না কখনো। ভেজা চুলের জন্য একটি চওড়া চিরুনি ও শুষ্ক চুলের জন্য ব্রিসলস ব্যবহার করুন।

>> নিয়মিত চুল ট্রিম করুন। প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ অন্তর চুল ট্রিম করলে দ্রুত লম্বা হয়। গাছের যেমন ছাঁটাই প্রয়োজন, তেমনি আমাদের চুল ছাঁটাই প্রয়োজন।

>> সালফেটস, প্যারাবেনস ও অ্যালকোহলযুক্ত চুলের পণ্য ব্যবহার করবেন না। এমন ধরনের প্রসাধনীর কারণেই বেশিরভাগ মানুষের চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। অর্গ্যানিক পণ্য ব্যবহার করুন চুলের যত্নে।

>> বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। স্ট্রেস বাড়লে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণও বেড়ে যায়। এতে প্রদাহ সৃষ্টি হয় ও চুলের বৃদ্ধিও কমে যায়।

চুল পড়া রোধে করণীয়

চুল পড়ার সমস্যার সমাধান করতে খাদ্যতালিকার দিকে বিশেষ নজর রাখুন। চর্বিহীন প্রোটিন, লেবু, বাদাম, গোটা শস্য ও ভাল চর্বি চুল পড়ার সমস্যা কমায়।

এর পাশাপাশি ভিটামিন বি, অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন ও জিঙ্ক রাখুন খাদ্যতালিকায়। যা চুলে পুষ্টি জোগায় ও মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।