উজানের পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের মাদারগঞ্জে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে যমুনা নদী। এরই মধ্যে শতাধিক ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে স্কুলসহ নানা স্থাপনা। আতংকে অনেকে নতুন ঠিকানার খোঁজে ছুটছেন।
উপজেলার একটি গ্রামের নাম পাকরুল। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ গ্রামে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এরই মধ্যে শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্ঘুম রাত কাটছে নদী-তীরবর্তী লোকজনের। সারারাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ভয়ে অনেকে ছুটছেন নতুন ঠিকানার খোঁজে।
ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষজন তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসে শিশুসন্তানদের নিয়ে আহাজারি করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
ঝুঁকিতে রয়েছে পাকরুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরই মধ্যে ভবন ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পাকরুল গ্রামের আলহাজ আলী বলেন, ‘পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ শুরু হয়। ফলে প্রবল ঘূর্ণিপাকে অনেক বসতবাড়ি রাতের অন্ধকারে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। হঠাৎ ভাঙনে চোখের সামনেই সবকিছু নদীতে তলিয়ে গেছে।’
তার মতো অনেকেই বলেন, দু-তিনদিন আগেও এখানে অনেক বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা ছিল। এখন সবই নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন তারা কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পাকরুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অনেক পুরাতন। নদীভাঙনের বিদ্যালয়টি হুমকির মুখে পড়েছে। এটি সরিয়ে নিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ বলেন, ‘নদীভাঙন রোধে বিভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধের কাজ শুরু হবে।’
সমীক্ষা অনুযায়ী নদীভাঙন রোধে যেখানে যা প্রয়োজন সে ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।