সব শিশুরাই কমবেশি দুরন্ত হয়। খেলার ছলে পড়ে যাওয়া কিংবা শরীরে ব্যথা পাওয়ার ঘটনা সব শিশুর সঙ্গেই ঘটে! তবে শিশু হঠাৎ পড়ে গিয়ে মাথায় ব্যথা পাওয়ার ঘটনা কিন্তু হেলাফেলা করবেন না। কারণ হঠাৎ মাথায় কোনো কারণে আঘাত লাগলে, তা ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে।

আঘাত গুরুতর হলে শিশু শারীরিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলতে পারে। মস্তিষ্ক সারা শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই শিশুর মাথায় আঘাত পাওয়ার ঘটনা কখনো এড়িয়ে যাবেন না। শিশু হয়তো তার সমস্যার কথা বলতে পারবে না, কিন্তু অভিভাবকের উচিত সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।

কোনো স্থান থেকে পড়ে গিয়ে, দেওয়ালে কিংবা ভারি কোনো বস্তুর সঙ্গে শিশু সজোরে মাথায় আঘাত পেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন- অত্যধিক যন্ত্রণা, কথা বলার সমস্যা, শরীরের ভার নিতে না পারা, মাথা ঘোরা, বমি, সঠিক ভাবে হাঁটাচলা না করতে পারা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, অবসাদ, উদ্বেগ, স্মৃতি হারিয়ে ফেলা, অনিদ্রা, দুর্বলতার মতো সমস্যা হতে পারে।

আঘাত গুরুতর হলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে ‘ব্রেন ডেথ’ হতে পারে। আবার ফেসিয়াল প্যারালাইসিস হওয়ারও ঝুঁকি থাকে। এমনকি হেমারেজ, মাথায় ফ্র্যাকচার, ডিফিউস অ্যাক্সোনাল ইনজুরিও হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের রক্তনালি পাতলা ও ছোট হয়। ফলে মাথায় আঘাত লাগতে সেখান থেকে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

কোন উপসর্গগুলো অবহেলা করবেন না?

>> আঘাত লাগার পর যদি নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
>> কথা বলতে বা দেখতে অসুবিধা হয়।
>> নাক, কান, মুখ দিয়ে আচমকা রক্ত বের হলে।
>> অতিরিক্ত বমি ও খিঁচুনি হলে কিংবা
>> শিশু অচেতন হয়ে গেলে।

এক্ষেত্রে কী করবেন?

প্রথমেই শিশুকে শুয়ে দিয়ে মাথায় আঘাতের বা ফোলা স্থানে বরফ দিন। চামড়া কেটে রক্ত বের হলে রক্তপাত বন্ধ করতে কাটা স্থান পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখুন।

সম্ভব হলে দ্রুত শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এসব লক্ষণ দেখলে শিশুকেস্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে মাথার সিটি স্ক্যান করাতে হবে।

মাথায় আঘাত গুরুতর না হলেও পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা শিশুর উপরে কড়া নজর রাখুন। অনেক সময়ে উপসর্গগুলো দেরিতেও প্রকাশ পায়।