খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আসন্ন প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ কর্মসূচির পরিধি বাড়ানো হবে। অতিদরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া কর্মসূচি বাড়াবে সরকার। প্রতি মাসে দেওয়া হবে ৩০ কেজি করে চাল।

সম্ভাব্য বাজেট হতে যাচ্ছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮ শ ৬৪ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকা বেশি বাজেটে নতুন করে আরও ১১ লাখ মানুষকে সামাজিক সুরক্ষায় আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। তবে আয়-ব্যয়ের হিসাবে ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম  বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব দেশেও পড়েছে। বর্তমান জনবান্ধব সরকার তাই ১০ টাকা দরে চাল বিতরণ কর্মসূচির পরিধি বাড়াবে। যাতে করে মানুষ কষ্ট না পায়। এক কথায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিতে বেশি বেশি বরাদ্দ দেওয়া হবে।’

আগামী অর্থবছরের সম্ভাব্য বাজেট তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ মোট ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩২ দশমিক ৫৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ এবং ৩২ দশমিক ৭৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বিতরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বছর খাদ্যশস্য সংগ্রহ অগ্রগতি সন্তোষজনক বা ৭৫ শতাংশ। মূল্য সমন্বয় করা না হলে আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকি বাবদ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন পড়বে। গ্যাসের মূল্য সমন্বয় করা না হলে এলএনজি আমদানি মূল্য পরিশোধ এবং প্রণোদনা প্যাকেজের সুদ ভর্তুকি দেওয়ার জন্য অন্যান্য ভর্তুকি খাতে আগামী অর্থবছরে ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমান করা হয়েছে।

খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে বিদ্যুৎ সরাসরি জড়িত। কারণ আধুনিক কৃষিতে সেচ কাজে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। সারের মূল্য সমন্বয় করা না হলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা বাবদ ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভর্তুকি ও প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ বাবদ জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ১ দশমিক ৯০ শতাংশ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রকৃত ব্যয় হয়েছে জিডিপির শতকরা ১ দশমিক ১৭ শতাংশ ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আয়-ব্যয়ের হিসাবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেটে ঘাটতি থেকে যাবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটে ব্যয় হবে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। ভর্তুকি ও প্রণোদনাতে খরচ করতে চায় ৭২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। ব্যয় মেটাতে রাজস্ব থেকে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা আয়ের। সাড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরেই পরিকল্পনা করছে সরকার।বাজার দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও মূল্যস্ফীতি ধরে রাখতে চায় সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে।