মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ ৯৬৩ জন আমেরিকানের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও হলিউড অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যানসহ আরও অনেকে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির অর্থনীততে ধস নামানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে তারা। এসব নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।
স্থানীয় সময় শনিবার (২১ মে) রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত নতুন তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা, আইনপ্রণেতা এবং অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। এই পদক্ষেপটি ওয়াশিংটনের অনুরূপ নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ বলে মনে করা হচ্ছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এটি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সোফি ট্রুডোসহ আরও ২৬ জন কানাডিয়ানকে নিষিদ্ধ করেছে।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর গত ১৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় রাশিয়া। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও মার্ক জাকারবার্গের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি।
অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পর কানাডার নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৩৫ ও ৩৬ বছর বয়সী কাতেরিনা তিখোনোভা ও মারিয়া ভরোন্তসোভা। ইউক্রেন আগ্রাসনের কারণে কানাডা ভ্লাদিমির পুতিনের দুই মেয়েসহ ঘনিষ্ঠ ১৪ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় গত ১৯ এপ্রিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা এক মাস ধরে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। বহু মানুষ হতাহতের খবর পাওয়া গেছে দেশটিতে। এর মাঝে কয়েকটি অঞ্চলে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার দাবিও করেছে ইউক্রেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় ৫০ লাখ ইউক্রেনীয়। যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিলেও থামতে নারাজ পুতিন সরকার। অন্যদিকে, হার মানতে রাজি নন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারেও। অধিকাংশ দেশে বেড়েছে সব পণ্যের দাম। ইউক্রেন, রাশিয়া থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করতে না পারায় খাদ্য সংকটও তৈরি হয়েছে কয়েকটি দেশে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে।