বাংলাদেশে থেকে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচার করার ঘটনায় পি কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদারকে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দপ্তরে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রথমদিকে সহযোগিতা না করলেও পরবর্তীতে তিনি ইডি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেন বলে জানা গেছে।
প্রথম দিকে কোনো তথ্যই পি কে হালদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেননি ইডি। পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের আলাদাভাবে জেরা করা হচ্ছে।
প্রায় চল্লিশটিরও বেশি প্রশ্নের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রথমার্ধের জিজ্ঞাসাবাদে পি কে হালদার খুব একটা সহযোগিতা না করলেও দ্বিতীয়ার্ধের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ইডি কর্মকর্তাদের সামনে ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন। ইডির চার কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে পি কে হালদারসহ পাঁচজনের কাছ থেকে যে মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছিল তা ইডির কর্মকর্তারা তাদের কাছে আনেন। এরপর তাদের সেই মোবাইলগুলো দিয়ে ওপেন করানো হয়। পরে মোবাইলের সব ডাটা সংগ্রহীত করা হয়। গ্রেফতারদের কাছ থেকে তিনটি ভিন্ন পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। এই পাসপোর্টগুলো কীভাবে তারা বানিয়েছিল বা কী কাজে এই পাসপোর্ট ব্যবহার করা হতো সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত শুক্রবার সারাদিন ধরে ইডির কর্মকর্তারা পি কে হালদারসহ তার সহযোগীদের বিভিন্ন অফিসে হানা দেন ও নগদ অনেক টাকা উদ্ধার করেন। বর্ধমানের কাটোয়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পি কে হালদার, উত্তম মিত্র, প্রিতিশ হালদার ও প্রিতিশ হালদারের স্ত্রী ও জামাতা সঞ্জীব হালদারকে গ্রেফতার করে। এরপর তাদের সল্টলেকের সিজিও কম্প্লেক্স এ নিয়ে আসা হয়।
মেডিকেল চেকআপের পর অনলাইনে ব্যাঙ্কশাল সিবিআইয়ের স্পেশাল কোর্টে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। পরে ইডি আদালতের কাছে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। এরপর আদালত পাঁচজনকে ইডির হেফাজতে দেয় ও এক নারীকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আগামী ১৭ মে ব্যাঙ্কশাল সিবিআই স্পেশাল কোর্টে তাদের আবার হাজির করা হবে। মনে করা হচ্ছে প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ থেকে ২২ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
বিশেষজ্ঞ মহল ধারণা করছেন ইডি শুধু আর্থিক কেলেঙ্কারি তদন্ত করবে। বেআইনি পাসপোর্ট, ভিসা, আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড তৈরি করার জন্য সিবিআইয়ের হাতেও তাদের তুলে দেওয়া হতে পারে।
কোন কোন ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে ও তার সাজা কতদিন হতে পারে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও এই মুহূর্তে পি কে হালদারকে বাংলাদেশ সরকার হাতে পাচ্ছে না বলেই মনে করছেন অনেকে।