আজ রোববার (১ মে)। মহান মে দিবস। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস নামেও পরিচিত। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবার এর প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব শ্রমজীবী মানুষকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

এছাড়া দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। এদিকে মে দিবস উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। অবশ্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিও শুরু হয়েছে আজ থেকে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন। তিনি ছিলেন শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় এবং জাতির পিতা এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতে গঠন করেন মজুরি কমিশন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। এই দিনে আমি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব মেহনতি মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই।

তিনি আরও বলেন, শ্রম কল্যাণ নিশ্চিতে ‘জাতীয় শ্রমনীতি, ২০১২’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নীতিমালা, ২০১৩’ এবং ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, ২০১১’ প্রণয়ন করেছি। পাশাপাশি, মানবসম্পদ উন্নয়নে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, মহান মে দিবস আমাদের সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকতে শেখায়।

প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শ্রমিকরা দিবসটি পালন করে থাকেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয় বিভিন্ন কর্মসূচি। পোশাক কারখানায় আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানের। যদিও করোনার কারণে গত দুই বছর তা হয়নি। এবার কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না থাকায় নানা কর্মসূচি হওয়ার কথা রয়েছে।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেটে’র শ্রমিকরা ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবিতে মিছিল করেন। কিন্তু আন্দোলনরত শ্রমিকদের দমাতে মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। এতে ১১ শ্রমিক নিহত হন। আহত ও গ্রেফতার হন আরও বহু শ্রমিক। পরে ‘প্রহসনমূলক’ বিচারের মাধ্যমে গ্রেফতার শ্রমিকদের মধ্যে ছয়জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

এরপর ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সমাবেশে ১ মে’কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় মে দিবস।