ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ ও দুটি হত্যা মামলার পর আরও একটি মামলা হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট থানায়। সংঘর্ষের সময় অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনায় ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিউমার্কেট থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন অ্যাম্বুলেন্সটির মালিক মো. সুজন।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাতে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সংঘর্ষের সময় মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সটির মালিক মো. সুজন বাদী হয়ে ১৫০ থেকে ২০০ অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে মামলা করেছেন।
তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫টি মামলা হয়েছে। ৫ মামলায় অজ্ঞাত মোট সাড়ে ১৭০০’র বেশি আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি, নিহতের পরিবার দুটি ও সর্বশেষ অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েলো।
১৯ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে একজন আহত ২৫-৩০ বছর বয়সী রোগীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু নিউমার্কেট এলাকায় গেলে সেটি ভাঙচুরের শিকার হয়।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে। তখন নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুই পক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
তখন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের দুই শিক্ষার্থী রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়- এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে নিউমার্কেট এলাকায় যায় ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। পরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
পরদিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ব্যবসায়ীরা সড়কে চলে এলে দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের গেটে এবং ব্যবসায়ীরা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
এরপর ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, চাঁদনী চক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।