বাজারে এখন তরমুজে ভরে গেছে। টকটকে লাল রসালো এই ফল সবার কাছেই প্রিয়। তরমুজ খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। স্বাস্থ্যের জন্য এই ফল খুবই উপকারী।
এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। আর এ কারণেই অনেকে ভাবেন তরমুজ ওজন কমাতো সাহায্য করে। তবে সত্যিই কি তরমুজ ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে?
তরমুজ ও শসা কিউকারবাইটেসিয়া পরিবারের অন্তর্গত। এ পরিবারের সব খাবারেই পানির পরিমাণ বেশি। ১০০ গ্রাম তরমুজে ৩০ ক্যালোরি, ০.৬ গ্রাম প্রোটিন, ৭.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৬.২ গ্রাম চিনি ও ০.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। অন্যদিকে এতে মোট পানি থাকে ৯১ শতাংশ।
সুস্বাদু মিষ্টি এই ফল সবারই প্রিয়। তবে অনেকেই প্রতিদিন তরমুজ খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন না। কারণ তরমুজের গ্লাইসেমিক সূচক ৭২, যা অনেক বেশি। ডায়াবেটিক রোগীর জন্য এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
তবে কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রতিবেদন অনুসারে, যেহেতু এতে কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলকভাবে কম, তাই এটি পরিমিতভাবে খাওয়া যেতে পারে।
এছাড়া এতে থাকে ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, কপার, ভিটামিন বি ৫ ও ভিটামিন এ সহ উদ্ভিদ যৌগ সিট্রুলিন ও লাইকোপেন। তরমুজের লাল রসালো সজ্জাকে ঢেকে রাখা সাদা অংশটি হল সিট্রুলাইন।
যা অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড আরজিনাইনে রূপান্তরিত হয়। ফুসফুস, কিডনি, লিভার ও প্রজনন ব্যবস্থার স্বাভাবিক কার্যকারিতা বাড়াতে আরজিনাইন গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন কমানোর জন্য তরমুজ কি আদর্শ?
ওজন কমানোর জন্য আপনি যে খাবারই নির্বাচন করুন না কেন, আগে জানতে হবে তার ক্যালোরি ও ফাইবার কত। ১০০ গ্রাম তরমুজে মাত্র ৩০ ক্যালোরি থাকে। এর ৯১ শতাংশ পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে জানা যায় বিভিন্ন গবেষণায়।
তবে এতে ফাইবার কম থাকে। ১০০ গ্রাম তরমুজে মাত্র ০.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। আপনি যদি ডায়েটে তরমুজ যোগ করতে চান তবে আপনাকে ফাইবারের একটি ভালো উত্সও যোগ করতে হবে।
হার্ভার্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরমুজে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একটি হলো লাইকোপেন, যা আসলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
অন্যটি হল সিট্রুলাইন, যা একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। এটি নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বাড়াতে পারে। রক্তনালিগুলো শিথিল করতে ও রক্তচাপ কমায় এই অ্যাসিড।
তরমুজ বেশি খেলে কী হয়?
অত্যধিক তরমুজ খেলেই কিন্তু আপনার শরীরের চর্বি পুড়বে না। বরং আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। অত্যধিক তরমুজ খেলে লিভারের প্রদাহ, গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা ও কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা বাড়তে পারে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণেই তরমুজ খাওয়া উচিত সবারই।