করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সচিবালয়ে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ বা ৩ মে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

দেশে করোনাভাইরাস মহামারির ব্যাপক সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত দুই বছর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এর পরিবর্তে দুই বছর ধরে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

তবে এ বছর দেশে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকাংশেই শিথিল হওয়ায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারবেন মুসল্লিরা। এরইমধ্যে ঈদগাহ মাঠ ঘিরে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাব-গাম্ভীর্য এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূটি প্রণয়ন এবং সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুসলিম দেশের কূটনীতিকদের দাওয়াত দেবে। সরকারি, আধা-সরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ‘ঈদ মোবারক’ লেখা সম্বলিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবন ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে।

ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধীকেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণকেন্দ্র, দুস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা হবে। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে জাতীয় জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থানে প্রবেশ এবং তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি ও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন।