স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সরকার। চলছে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভের শঙ্কায় এবার সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (২ এপ্রিল) দেশটির সরকার নির্দেশ দেয় ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ রাখার। শ্রীলঙ্কা সরকার বলছে যে, ভুল তথ্য ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে চলছে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ। শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হওয়া কারফিউ চলবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার।
দেশটিতে অর্থনীতি ধসে পড়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে কলম্বোর মিরিহানায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ মানুষ। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। বিক্ষোভের ঘটনায় ৪৫ জনকে আটক করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট, খাদ্য সংকট, প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী দামসহ নানা সমস্যার বেড়াজালে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণ হয়ে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। গত মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া জুলাইয়ে বন্ড পরিশোধে ব্যয় হয় এক বিলিয়ন ডলার। শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।