আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর মাঝে সদস্যসংগ্রহ বই বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ এখন বুঝে গেছে বিএনপির আন্দোলনের ডাক দূরভিসন্ধিমূলক ফাঁকা আওয়াজ, যা মিথ্যাবাদী রাখাল ও বাঘের শিশুতোষ গল্পের কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়।

বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে জানতে চাওয়ায় আওয়ামী লীগ নাকি জনগণকে বিভ্রান্ত করছে- বিএনপি মহাসচিবের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের নয়, এ প্রশ্ন জনগণের। জনগণই জানতে চেয়েছে বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন রেখে বলেন-বিএনপি যে কথায় কথায় গণ-অভ্যুত্থানের স্বপ্ন দেখে তাতে বিএনপির কে নেতৃত্ব দেবে?

তিনি আরও বলেন, বিএনপি যাকে আন্দোলনের নেতা বলছে সে তো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি, রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছে। জনগণ সেই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে কেন গণঅভ্যুত্থান করবে?

মিথ্যাচার আর বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে জনগণের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন ও নির্বাচনের ব্যর্থতা থেকেও বিএনপি শিক্ষা নিতে পারেনি?

বিএনপি একেক সময় একেক কথা বলে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কখনো নিরপেক্ষ সরকার,কখনো নির্বাচনকালীন সরকার এখন আবার বিএনপি নেতাদের জাতীয় সরকারের ভূত মাথায় ঢুকেছে, আসলে বিএনপি কী চায় তা নিজেরাও জানে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এদিক-ওদিক না ঘুরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, অনেক ষড়যন্ত্র করেও গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কোনো লাভ হয়নি। বাকি সময়েও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

সময় ও স্রোত যেমন কারে জন্য অপেক্ষা করে না তেমনই নির্বাচনও বিএনপির জন্য অপেক্ষা করবে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও একইভাবে যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ যাকে চাইবে সেই ক্ষমতায় আসবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দরকার সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ, এমনটা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ গড়ে তুলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও মজবুত করি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এজন্য সারাদেশে দলে কোন্দল-কলহ দূর করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর মাঝে সদস্য সংগ্রহ বই বিতরণ করা হয়, এতেই প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন যাদের দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক কার্যক্রম বিদ্যমান বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে পারে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন এবং ২০২৩-২৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ লক্ষ্যে দলকে এখন থেকেই আরও সুসংগঠিত ও স্মার্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বলে জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।