ওজন কমানোর রেসে দৌঁড়াতে শুরু করলেও বারবার ফিরে যেতে হয় ওজন মেশিনের কাছে। ঠিক কতটুকু ওজন কমছে তা জানতে প্রতিদিনই ওজন মেপে দেখেন নিশ্চয়ই!

দেখা যায় কিছুদিনের মধ্যে ২-৩ কেজি ওজন কমে গেছে। আবার একদিনের মধ্যেই দেড় থেকে ২ কেজি বেড়ে গেছে! তবে তা চর্বির ওজন না কি পানির, তা কখনও ভেবে দেখেছেন কি?

আসলে ওজন কমানোর যাত্রার প্রথম দিকে যতটুকু কমে, তা চর্বি নয় বরং পানির ওজন। তবে আপনি যে পানির ওজন হারাচ্ছেন তা বুঝবেন কীভাবে?

যখন দেখবেন শরীরের ওজন ওঠা-নামা করছে কিংবা খুব দ্রুত কমছে তাহলে নিশ্চয়ই পানির ওজন। অন্যদিকে যদি আপনি স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও ব্যায়াম অনুসরণ করে ধীরে ধীরে ওজন হারান ও শরীর পাতলা দেখাতে শুরু করে, তাহলে বুঝবেন চর্বি হারাচ্ছেন।

আসলে ওজন মেশিনে দাঁড়ালে এটি শরীরের মোট ওজন পরিমাপ করে। জানলে অবাক হবেন, শরীরের বেশিরভাগ ওজন পানি থেকে আসে। যা হাড়ের মতোই শরীরের সবচেয়ে ভারী জিনিস।

প্রাথমিকভাবে শরীরের যে ওজন কমতে থাকে তা পানির। আর যখন ক্যালোরি মেপে খান ও শরীরচর্চায় অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করেন, তখন শরীরের অ্যানার্জি গ্লাইকোজেনে পরিণত হয়।

গ্লাইকোজেন হলো সাধারণ চিনির গ্লুকোজের একটি স্টোরেজ ফর্ম। এটি লিভার ও মাংসপেশীতে সংরক্ষিত থাকে। এই গ্লাইকোজেন পানির উপরে থাকে। এটি পানিতে তার ওজনের তিনগুণ ধারণ করে।

এক গ্রাম গ্লাইকোজেন ৩ গ্রাম পানি ধারণ করে। তাই ব্যায়াম বা ক্যালোরি কমানোর মাধ্যমে আপনি যদি গ্লাইকোজেন ব্যবহার করেন, তখন পানির ওজনও কমতে শুরু করে। আবার যখন আপনার গ্লাইকোজেন স্টোর পরিপূর্ণ হয়ে যায়, তখন পানির ওজনও ফিরে আসে।

পানির ওজনের সবচেয়ে বড় লক্ষণ হলো ওজনের ঘন ঘন ওঠানামা। আবার শরীরের পানির ওজন নির্ভর করে- আপনার হরমোনের কার্যকারিতা, কতটুকু পানি পান করছেন ও আরও কিছু বিষয়ের উপর। তাই যদি ওজন হারানোর পাশাপাশি তা আবার বাড়তে থাকে তাহলে হতাশ হবেন না।

যদি আপনি রাতারাতি ১ কেজি ওজন হারান, তাহলে বুঝবেন তা পানির ওজন। বেশিরভাগ মানুষই এক সপ্তাহে ১-১.৫ কেজি ও এক মাসে শরীরের চর্বির প্রায় ১ শতাংশ হারাতে পারে। ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এটি একই রকম।

তাই ওজন মাপার মেশিনে পা রেখেই যদি দেখেন দেড় কেজি বেশি দেখাচ্ছে, তাহলে চিন্তার কারণ নেই। এর অর্থ হলো সেটি পানির ওজন। আসলে একদিনেই এত বেশি চর্বি বেড়ে সম্ভব নয়।