শুরু হচ্ছে অগ্রহায়ণ। আর অগ্রহায়ণ মানেই শীতের হালকা আমেজ। তাই ঋতুর এ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পোশাকেরও পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আগে যেখানে হাফহাতা টি-শার্ট বা হাফহাতা শার্ট পরে ঘুরে বেড়ানো যেত, সেটি এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। তার পরিবর্তে শরীরে জড়ানো হচ্ছে ফুলস্লিভ শার্ট, টি-শার্ট বা পোলো শার্ট। আর এ আবহাওয়ায় অনেকের কাছেই হালকা কাপড়ের বদলে একটু মোটা কাপড় হিসাবে ফুলস্লিভ শার্ট বেছে নিচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই তাদের পোশাকের তালিকায় রাখছেন ফুলহাতা ক্যাজুয়াল শার্ট। এ ছাড়া ক্যাজুয়াল শার্ট পরতে যেমন আরাম, তেমনি ফ্যাশনেবল ও চলাফেরা করা যায় স্বাচ্ছন্দ্যে। অন্যদিকে যারা করপোরেট অফিসে চাকরি করছেন না, তারা অনায়াসেই পরতে পারেন এ সময়ের ফ্যাশনেবল ফুলহাতা ক্যাজুয়াল শার্ট। করপোরেট অফিস ছাড়া ব্যক্তিগত অফিস, ব্যবসা কেন্দ্র বা ভ্রমণে ক্যাজুয়াল শার্ট পরে গেলে একই সঙ্গে ফ্যাশনেবল ও মানানসই।
ক্যাজুয়াল শার্টের বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর হাতা গুটিয়ে রাখা যায় ইচ্ছামতো। আবার প্যান্টের সঙ্গে ইন না করলেও চলে। এ ছাড়া জুতার দিক থেকেও রং মেলাতে হয় না। বলা যায়, ক্যাজুয়াল শার্ট অনেকটা স্বাধীন ফ্যাশন। আবার একই সঙ্গে আরামদায়ক।
আড়ং-এর ফ্যাশন ডিজাইনার ফয়েজ হাসান বলেন, জিন্স বা গ্যাবার্ডিন প্যান্টের সঙ্গে ফুলহাতা ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট বা পলো শার্ট পরে অফিস, বাজারঘাট, ব্যক্তিগত কাজে বা ভ্রমণে যাওয়া যায় অনায়াসে। তবে শার্ট পরলেই হবে না, সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে শার্টের রং ও নকশার দিকে। কারণ বয়স, পেশা ও স্থান অনুযায়ী শার্ট পরতে পারলে ক্যাজুয়াল শার্টেও নিজেকে নিয়ে যাওয়া যাবে অন্য মাত্রায়। এ ছাড়া ক্যাজুয়াল শার্টের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এ শার্ট যখন-তখন, যেখানে-সেখানে পরে যাওয়া যায়। তবে শার্টের রং ও নকশার দিকে একটু খেয়াল রাখলে ক্যাজুয়াল শার্টেও নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যাবে সব পরিবেশের সঙ্গে। অন্যদিকে অন্য শার্টের চেয়ে ক্যাজুয়াল শার্টের দামও তুলনামূলক কম। তাই শার্টও কেনা যায় বেশি এবং ফ্যাশনটাও করা যায় বেশি।
অনেকেই আছেন বারো মাসেই ক্যাজুয়াল শার্টকে প্রাধান্য দেন। তাদের কাছে শার্টই অন্যতম পোশাক। সে জন্য তারা বারো মাসই শার্ট পরেন। তা উৎসবই হোক, আর শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা হোক। শার্টেই তাদের আনন্দ।
পুরানা পল্টনে নিজের একটি ব্যবসা কেন্দ্র পরিচালনা করেন আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, কাপড় হিসাবে ক্যাজুয়াল শার্টের জুড়ি নেই। আর এখন তো ক্যাজুয়াল শার্টেরই সময়। এটি পরতে আরাম। আবার সব জায়গায় যাওয়া যায়, সব কাজও করা যায়।
ক্যাজুয়াল শার্টের পাশাপাশি অনেকে এ সময় ফুলহাতা ফরমাল শার্টও বেছে নেন। ফ্যাশন, ব্যক্তিত্ব বা আভিজাত্যে ফরমাল শার্টের জুড়ি নেই। এ ছাড়া উৎসব-পার্বণে বা পার্টিতেও ফরমাল শার্টের কদর রয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রহমান বলেন, অফিসে সব সময়ই ফরমাল শার্টে নিজেকে সাজাই। আর শীতের সময় তো কথাই নেই। ফরমাল শার্টেই আনন্দ পাই।
দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে নানা ধরনের দেশীয় তাঁতের কাপড়ে তৈরি ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্ট পাওয়া যায়। এসব কাপড়ের মধ্যে আছে- সুতি, খাদি, সিল্ক, অ্যান্ডি ইত্যাদি। এসব ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্ট যেমন আরামদায়ক, তেমনি ফ্যাশনেবল। অন্যদিকে রং ও নকশায় এসব ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্টে দেখা যায় দেশীয় আমেজ। ফ্যাশন ব্র্যান্ড আড়ং, রঙ বাংলাদেশ, বিবিয়ানা, দেশাল, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, নিপুণ, বাংলার মেলা, সাদাকালো, নগরদোলাসহ দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্ট পাওয়া যায়।
দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো ছাড়া অন্যান্য ফ্যাশন হাউজে এখন ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্টের অনেক সংগ্রহ রয়েছে। ফ্যাশন হাউজ ইজি, ক্যাটস আই, জেন্টল পার্ক, লা রিভ, আর্টিজানসহ ইত্যাদি হাউজে ফরমাল ও ক্যাজুয়াল শার্ট পাওয়া যায়।
ফ্যাশন হাউজগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন মার্কেটেও ক্যাজুয়াল শার্ট মিলবে। চাইলে কাপড় কিনে ফরমাল বা ক্যাজুয়াল শার্ট বানিয়ে নিতে পারেন। এতে নিজের পছন্দমতো শার্ট পাওয়া যায়।