বর্তমানে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। এর মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রাথমিক অবস্থায় ডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায় না। এ কারণে পরবর্তীতে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে কষ্ট হয়।

তবে এ রোগের কিছু উপসর্গ দীর্ঘদিন শরীরে লুকিয়ে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না।

ডায়াবেটিস হলে মুখে শুষ্কতা বাড়ে, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা প্রকাশ পায়। এসব লক্ষণ দেখে হয়তো অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। তবে জানলে অবাক হবেন, আঙুল দেখেও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষের হাতের নখে ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ লুকিয়ে থাকতে পারে। এক সমীক্ষা অনুসারে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রক্তসঞ্চালন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা যায়।

ডায়াবেটিস রোগীর নখের চারপাশ অনেকটা লাল হয়। এ ছাড়াও নখের কিউটিক্যালের (নখের সাদা অংশ) দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিসে ত্বকের বিভিন্ন ফোস্কা, রক্তক্ষরণ ও ঘাও হতে পা। এসব ডায়াবেটিসের সতর্ক সংকেত।

গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে রক্ত সঞ্চালনের অভাবে নখের গঠনকারী টিস্যু মরতে শুরু করে। এতে নখের ওপর একটি উলম্ব রেখাও তৈরি হতে পারে। ডায়াবেটিস ছাড়াও অন্যান্য রোগের কারণেও নখে এমন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তাই হাত ও পায়ের নখে নজর রাখুন।

আবার ডায়াবেটিস রোগীদের অনাইকোমাইকোসিস নামক ছত্রাক সংক্রমণের প্রবণতা বেশি। আপনার যদি একই ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে নখের রং হলুদ হতে পারে। এমনকি নখের উপরের পৃষ্ঠ রুক্ষ দেখাবে।

এনএইচএস’র মতে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ৭টি লক্ষণের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি। রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাবের বেগ হওয়া সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ ডায়াবেটিসের। শরীরে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ফলে বারবার প্রস্রাবের বেগ হয়।

এছাড়াও খুব বেশি পানি পিপাসা লাগা বা হঠাৎ ওজন কমে যাওয়াও ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। ত্বকে চুলকানির অভিযোগ, ক্ষত নিরাময় না হওয়া বা চোখ ঝাপসা হয়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের গুরুতর লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত।