ঋতুর পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতিতে ঝেঁকে বসছে শীত।  কদিন পরেই হাড়কাঁপানো শীতে জুবুথুবু হবে জনজীবন।  এই সময়ে শরীর ও ত্বকের যত্নে খাবার-দাবারের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে।  নিয়মমাফিক খাবার না খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।  কারণ শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

শীতকালীন খাবার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক ডা. আলমগীর মতি।

শীতে খাওয়ার নিয়ম ঠিকঠাক না মেনে চললে একদিকে যেমন শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে তেমনি ত্বকও অনুজ্জ্বল হয়ে যাবে। তাই ঋতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নজর দিন ডায়েটে।

যা করবেন

* শরীর ভেতর থেকে সুস্থ থাকলেই ত্বক উজ্জ্বল রাখা সম্ভব। শীতের শুরু ও শেষের সময়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়।  কারণ, ঠাণ্ডা আবহাওয়া পানি পানের প্রবণতা কমে যায়।  এই সময় বেশি করে পানি পান প্রয়োজন। হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন। মাঝে মাঝে ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন। সারাদিনে তিন বেলার খাবারের মেন্যুতে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, গরম দুধ, দুধ ছাড়া চা, তিন-চার ফোঁটা লেবুর রস। এটি পানির সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেরও কাজ করবে। শীতে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে।

* মৌসুমি ফল যেমন কমলালেবু, আপেল, মাল্টা ইত্যাদি নানা ধরনের শীতের ফল ও শাকসবজি যথেষ্ট পরিমাণে খান। এগুলোর মধ্যে উপস্থিত ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের সজীবতা বজায় রাখে, খাদ্য হজমে সাহায্য করে। শরীরের নিস্তেজভাব কাটায়। টাটকা ফল ও সবজিতে রয়েছে বায়োটিন যা ত্বক ও চুল ভালো রাখে। তাই তাজা সবজি ও ফল খাওয়া জরুরি। প্রসেসড বা ফ্রোজেন ফুডের বদলে ন্যাচারাল ফুড খাওয়ার চেষ্টা করুন।

* শীতে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রয়োজন ফ্যাটি এসিড। বাদাম, মাছ এই ধরনের খাবার বেশি করে খান। ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চলুন। এই সময়ের নানা ধরনের ফল ও সবজি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খান। প্রোটিন জাতীয় খাবার শরীরের তাপমাত্রা বজায় রেখে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

* শীতের সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে এবং প্রচুর খাওয়াও হয়। তাই শরীরে ক্যালরিও বেড়ে যায়। শীতে দুধ দিয়ে তৈরি চা ও কফি না খেয়ে গ্রিন টি খেতে পারেন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের খাবারের বদলে সালাদ খান চাইলে অলিভওয়েল ব্যবহার করতে পারেন কারণ এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে যা হার্টের জন্য ভালো। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ভাত ও রুটি কম খান। প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফল দিয়ে সালাদ বানিয়ে খান।

* শীতকালে যেহেতু বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা বেড়ে যায় তাই শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ কিছু হার্বসের সাহায্য নিতে পারেন। এগুলো সর্দি-কাশি বা ঋতু পরিবর্তনের অন্যান্য অসুখ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে তুলসী কার্যকরী। তুলসীতে আছে বিটা ক্যারোটিন ও ইউজিনল। বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে ও ইউজিনল ব্যাকটেরিয়া দূর করে। প্রতিদিন রঙচায়ের সঙ্গে কয়েকটি তুলসী পাতা মিশিয়ে খান দেখবেন শরীর সুস্থ হয়ে গেছে। গলায় খুসখুসানি হলেও তুলসী ভীষণ কাজে আসে। স্যুপ, সালাদ বা পাস্তার সঙ্গে তুলসী পাতা