ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়লেও প্রতি কিলোমিটারে বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিন দিন ধরে ধর্মঘটের মুখে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ এবং বাস মালিকদের দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সারা দেশে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা হচ্ছে। আর মহানগরীতে বিভিন্ন রুটের বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সার থেকে বেড়ে হচ্ছে ২ টাকা ১৫ পয়সা। মিনিবাসের ক্ষেত্রে ১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হচ্ছে ২ টাকা ৫ পয়সা।
এই হিসাবে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং ঢাকায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভাড়া বাড়ছে। বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা এবং মিনিবাসে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে সারা দেশে তিন দিন ধরে চলা ধর্মঘটের মধ্যেই রোববার সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার বনানীতে বিআরটিএ দপ্তরে পরিবহণ মালিকদের সঙ্গে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ডিজেলের দাম বাড়ানোয় বাস ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। দূরপাল্লার প্রতি কিলোতে ১ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মহানগরে প্রতি কিলোতে ২ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) থেকে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক রাকেশ ঘোষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে নগর পরিবহণে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের জন্য ১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আর ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ১ টাকা ৪২ পয়সা।
গত ৩ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ওইদিন রাত ১২টা থেকেই কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রজ্ঞাপনে। পরদিন থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দেশের মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক সংগঠনগুলোও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধি প্রতিবাদে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে সারা দেশে ধর্মঘট শুরু পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা। এই পরিবহণ ধর্মঘটে সারা দেশ অচল হয়ে পড়েছে। তিন দিন ধরে পরিবহণে ধর্মঘটে জিম্মি রয়েছেন সাধারণ মানুষ। শিকার হচ্ছেন সীমাহীন দুর্ভোগের।