রাজধানীর অদূরে আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদে ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে দ্বিতীয় দিনের মধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরিরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন।

এর আগে এই ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচজনের মরদেহ। নদীতে তীব্র স্রোত ও আলোকস্বল্পতার কারণে শনিবার উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল। রোববার নৌবাহিনীর দুটি দলের নয় জন ডুবুরি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ডুবুরিরাও অভিযানে নেমেছেন। তারা বিভিন্ন স্পটে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন।

নৌবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পেরেছি নদে ডুবে যাওয়া ট্রলারের সাতজন নিখোঁজ ছিলেন। তার মধ্যে গতকাল পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, রোববার সকাল ৭টা থেকে নৌবাহিনী দুটি দলে মোট নয় জন ডুবুরি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্তও নিখোঁজ দুইজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌবাহিনীর একাধিক ডুবুরি জানান, নদে স্রোত রয়েছে এবং পানির নিচে বালু রয়েছে। ঘটনাস্থলে কোনো মরদেহ থাকলে ভেসে ওঠার কথা। এ ঘটনায় নিখোঁজ দুইজনের যদি মৃত্যু হয়েই থাকে তবে স্রোতে মরদেহগুলো দূরে ভেসে গেছে।

এর আগে শনিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গাবতলী কয়লার ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ’র গাবতলী ল্যান্ডিং স্টেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, নদীর স্রোতের কারণে মরদেহগুলো ভেসে দূরে যেতে পারে। তাই আমরা জনগণের সহায়তা চাচ্ছি। কোনো মরদেহ ভাসতে দেখলে আমাদের জানানোর অনুরোধ করেছি।

তিনি আরও বলেন, সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের (শনিবার) দিকে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। ট্রলারটিতে কোন বাল্কহেড ধাক্কা দিয়েছে তা আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। নৌ-পুলিশ এ ব্যাপারে কাজ করছে। অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ সহায়তা করছে।

ট্রলারে কতজন যাত্রী ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, ট্রলারে কতজন যাত্রী ছিলেন তা জানতে পারিনি। তবে সাতজন নিখোঁজের সংবাদ পাই আমরা। এখন পর্যন্ত চার শিশু ও এক নারীসহ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার চার শিশুরই বয়স ছয় বছরের নিচে।