বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে কামরুল হাসান শায়ক প্রতিষ্ঠিত এক নাম। ১৯৬৫ সালে চাঁদপুর জেলার রঘুনাথপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা মৃত সিরাজুল হক ভূঁইয়া এবং মাতা সালমা বেগম। শৈশবকাল থেকেই জনাব কামরুল হাসান শায়ক ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। লেখালেখি ছিল তাঁর অন্যতম প্রিয় শখ। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি লেখালেখিতেও ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাধর।

জীবনের প্রথম দিকের কর্ম প্রচেষ্টার ফল হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পড়াশুনা শেষ করে প্রকাশনা শিল্পে মনোনিবেশ করে অর্জিত দক্ষতাকে কাজে লাগান এবং সফলতার শিখরে আরোহন করেন। পরবর্তীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড’-এর অন্যতম কর্ণধার।

জনাব কামরুল হাসান শায়ক কৌশলগত লক্ষ্য, অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সিদ্ধহস্ত। তিনি তাঁর সফল কর্মজীবনে সৃজনশীল কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, কারিগরি উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক পরামর্শ সংক্রান্ত কার্যাদির মাধ্যমে স্থায়ী ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করেন। তাঁর বহুমুখী আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা সৃষ্টি এবং হিসাবরক্ষণ দক্ষতার ফলে তিনি বহুসংখ্যক উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তি বান্ধব বাজার সৃজন করার কৃতিত্ব দেখান।

তাঁর ২০ বছরেরও বেশি সময়ের প্রগতিশীল অভিজ্ঞতার দরুণ তিনি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন এবং সম্প্রসারণশীল লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যে কারণে তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি বিরামহীন নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বেই বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আজ International Publisher’s Associationএর গর্বিত সদস্য। ব্যবসায় জগতে তিনি ১৯৯০ সাল থেকে ‘পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার হিসেবে পেশাগত কার্যক্রম শুরু করেন।

পরবর্তীতে ২০০০ সাল থেকে কোম্পানীটি লিমিটেড কোম্পানীতে পরিণত হয়। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রকাশনা ব্যবসার সামগ্রিক বিকাশ, ব্যবস্থাপনা ও বিপণন সংক্রান্ত কার্যাদিসহ জটিল আর্থিক নীতি এবং পদ্ধতি বিষয়ে তাঁর উপলব্ধির কারণে পরিচালনাগত সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি করর্পোরেট বিষয়াদির বিশ্লেষণ এবং দ্রুততার সাথে পরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়ন করে থাকেন।

বাংলাদেশের প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোতে তাঁর নেতৃত্ব অত্যন্ত উজ্জ্বল। শুধু তাই নয়, তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৯ সালে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘Letter n Colour Ltd’ নামক অন্য একটি কোম্পানী যাত্রা শুরু করে, যা কিনা বর্তমানে বাংলাদেশের স্বনামধন্য এবং শীর্ষস্থানীয় প্রিন্টিং কোম্পানী।

শুরু থেকেই তিনি এই কোম্পানীতে তাঁর অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে বিশ্বমানের পুস্তক বিপণনের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের প্রথম চেইন বুক শপ। প্রকাশনা ব্যবসায়ে তাঁর অভূতপূর্ব সফলতার প্রভাবে তিনি ২০১২ সালে ‘অক্ষরপত্র প্রকাশনী’ এবং ‘দারসুন পাবলিকেশন্স’ নামক আরও দুটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।