করোনার ভয়ঙ্কর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে এবার দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি। স্থানীয় সময় শনিবার রাত থেকে শুরু হবে এ লকডাউন। লকডাউনের আওতায় পড়ছে সিডনিসহ আশপাশের ব্লু মাউন্টেন, সেন্ট্রাল কোস্ট ও ওলংগং অঞ্চল। শনিবার এমনটা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। বিধিনিষেধ আরোপের পরও সংক্রমণ ঠেকানো না যাওয়ায় এর আগে এক সপ্তাহের লকডাউনে ছিল শহরটি। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল দুই জুলাই। এর মাঝে আবারও লকডাউন বাড়ালো নিউ সাউথ ওয়েলস প্রশাসন।
সম্প্রতি সিডনিতে ৮০ জনের বেশি মানুষের শরীরে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে নিউ সাউথ ওয়েলস প্রশাসন। শুরুতে দেয়া হয় সাধারণ বিধিনিষেধ, পরে এক সপ্তাহের লকডাউন। এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন।
আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত সবাইকে লকডাউন মেনে চলার আহ্বান জানান নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান। তিনি জানান, সিডনি ও আশপাশে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর সরকার। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে বাঁচতে সবাইকে সঠিকভাবে লকডাউন মানার আহ্বান জানিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের মুখ্যমন্ত্রী।
সিডনি পুলিশ বলছে, মানুষকে লকডাউন মানাতে গাড়িগুলোতে আলাদা নাম্বার প্লেট ব্যবহার করা হবে। যাতে করে কে কতবার বের হয়েছে তার হিসাব রাখা যায়।
এরআগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে নিউজিল্যান্ড নিজেদের দেশে নতুন করে প্রবেশকারীদের জন্য পুনরায় কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা চালু করেছে। ডেল্টাকে করোনার সবচেয়ে শক্তিশালী ধরন হিসাবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সর্বপ্রথম করোনার ডেল্টা ধরনটি শনাক্ত হয় ভারতে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেকগুলো দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ৭৪টির বেশি দেশে শনাক্ত হয়েছে এ ভ্যারিয়েন্ট। ডেল্ট ভ্যারিয়েন্টে ভারতের পর সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে নতুন শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষের শরীরে মিলছে এ ভ্যারিয়েন্ট।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অন্যতম সফল দেশ অস্ট্রেলিয়া। দেশটির ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে ৩০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯শ জনের বেশি।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রাপ্তবয়ষ্কদের মধ্যে তিন শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২৫ শতাংশ মানুষকে দেয়া হয়েছে এক ডোজ ভ্যাকসিন। অস্ট্রেলিয়া সরকার বলছে, দেশটির বেশিরভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা গেলে প্রয়োজন হবে না লকডাউনের।
সূত্র: বিবিসি