পাচার হওয়া নদী আক্তার পরবর্তীতে হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক। পঞ্চম শ্রেণি পাস নদী ৪ ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী। ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পর্যন্ত তার জাল বিস্তৃত।

বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা নদী। পাচার করার পর মেয়েদের তদারকি করতে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ করেন তিনি। বহুভাষায় পারদর্শী এই নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ভারতে গ্রেপ্তার টিকটক হৃদয় বাবুসহ মানবপাচার চক্রের সদস্যদের। সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে অনেক সময় পানশালায় পার্টিতে মশগুল এই নারী। এক ডজন নামধারী এই নারীকে গ্রেপ্তারে চলছে বিশেষ অভিযান। মানবপাচারকারী পরিচয় আড়াল করতে নিজেকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টার কমতি নেই তার। দেশ-বিদেশে তথাকথিত নৃত্য পরিবেশনও করেন তিনি। ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকেও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পুলিশের তদন্তেও নদীর নাম উঠে এসেছে।

পুলিশ বলছে, তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আন্তর্জাতিক নারী পাচারচক্রের আরও তথ্য জানা যাবে। বর্তমানে নদী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বলে পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় পাচার হয় নদী। চড়াই-উৎরাইয়ের এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। ২৮ বছরের এই নারীর জালে আটকা পড়ে ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পাচার হয়েছে বহু শহুরে দরিদ্র কিশোরী ও তরুণী। তারপর তাদেরকে যৌনকর্মে বাধ্য করে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাচ্ছে পাচারকারীরা। পাচার হওয়া মেয়েদের দেখভালে প্রায়ই বিদেশে যাতায়াত করেন নদী। দ্রুত পারদর্শী হয়ে ওঠেন আরবি, হিন্দি, তেলেগু ও মালয় ভাষায়। বহু ভাষায় দখল থাকায় দ্রুতই চক্রে শক্তিশালী ভিত গড়ে ওঠে নদীর। দায়িত্ব পান আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের বাংলাদেশ সমন্বয়কের।