ইউরো ২০২০ এর দ্বিতীয় ম্যাচটি ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়া ডেনমার্কের মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে নিয়ে তোলপাড় গোটা ফুটবলবিশ্ব।
ইউরোপের বিভিন্ন গণমাধ্যমের এখন পর্যন্ত খবর, হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণেই মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই ড্যানিশ মিডফিল্ডার।
যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি স্থগিত করে দেয় উয়েফা। তবে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে স্থগিত হয়ে যাওয়া সেই ম্যাচ ফের শুরু হয় বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিটে।
ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হওয়ার কথাই ছিল। তবে ফের ম্যাচ শুরু হওয়ার নেপথ্য নায়ক সেই এরিকসেনই।
হাসপাতাল থেকেই ভিডিও কল দেন এরিকসেন। ম্যাচটি চালিয়ে নিতে উয়েফার কাছে অনুরোধ জানান। সতীর্তদের জানান, শঙ্কা কেটে গেছে, তিনি আপাতত বিপদমুক্ত।
প্রিয় সতীর্থের সেই অনুরোধ আর ফেলতে পারেনি ডেনমার্ক। উয়েফাও দ্বিতীয়ার্ধ মাঠে গড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
শনিবার এরিকসেনের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাটি ছিল ম্যাচের ৪৩ মিনিটে।
ফিনল্যান্ডের আক্রমণভাগের সামনে একটি থ্রো-ইন পেয়েছিল ডেনমার্ক। মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের উদ্দেশ্যে থ্রো-ইনটি করেন সতীর্থ খেলোয়াড়। কিন্তু সেই বল আর রিসিভ করতে পারেননি তিনি।
বলের কাছে পৌঁছানোর জোর প্রচেষ্টা চালান তিনি। সর্বশক্তি দিয়ে পা বাড়াতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। মাঠে লুটিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ডেনমার্কের এই তারকা ফুটবলার।
দৌড়ে আসেন সতীর্থরা। উৎকণ্ঠায় যার যার আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে যান দর্শক-সমর্থকরাও।
বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে দৌড়ে আসে মেডিকেল টিম। প্রাথমিকভাবে হার্টঅ্যাটাকের আশঙ্কা করেন তারা।
এতে হতবিহ্বল হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাঠের খেলোয়াড়রা।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরও জ্ঞান ফিরছিল না এরিকসনের। তাকে ঘিরে বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন সতীর্থরা। এরিকসেনকে সিপিআর দেন ডেনমার্ক অধিনায়ক সাইমন কায়ের।
টানা ১০ মিনিট ধরে সিপিআর দেওয়ার পরও যখন জ্ঞান ফিরছিল না এরিকসেনের, তখন স্ট্রেচারে করে তাকে মাঠের বাইরে নেওয়া হয়। জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়।
এরই মধ্যে চোখ মেলে তাকান এরিকসেন। তার জ্ঞান ফেরার খুশিতে চোখ বেয়ে অঝরে অশ্রু ঝরতে থাকে সতীর্থদের। গ্যালারির দর্শকরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এমন পরিস্থিতিতে ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন আয়োজকরা।
এরিকসেনকে যখন হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল কাঁদছিলেন তার সতীর্থরা। পরে উয়েফা জানায়, শঙ্কা কেটে গেছে, আপাতত বিপদমুক্ত এরিকসেন।
পরে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিটে আবারও শুরু হয় ম্যাচ।
আর সেই ম্যাচে জোয়েল পহযানপালোরার গোলে ফিনল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ডেনমার্ক।
গোলের পর কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি ফিনল্যান্ডের ফুটবলারদের। প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডারের জন্য মন কেঁদেছিল তাদেরও।