রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে পদ্মায় নিখোঁজ মাইক্রোবাসের চালক মারুফ হোসেনকে (৪২) জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও চালকের স্বজনরা। তার লাশের আশায় অপেক্ষায় স্বজন ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

এদিকে নিখোঁজ চালকের তিন কন্যা সন্তান বাড়িতে আহাজারি করছে। স্বজনদের সঙ্গে তাদের মামাকে তারা বলেছে- ‘মামা, তোমরা আমাদের বাবারে ছাড়া বাসায় ফিরবা না।’

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঝড়ে পল্টনের ওপর থেকে মাইক্রোবাসটি নদীতে পড়ে যায়। বেলা দেড়টার দিকে উদ্ধারকর্মীরা মাইক্রোবাসটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।কিন্তু ভেতরে  থাকা চালক মারুফের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এদিকে মাইক্রোটিকে উদ্ধারের পর চালকের খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসের রাজবাড়ীর উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন। বুধবার সরেজমিন গিয়ে দৃশ্যত তাদের কোনো অভিযান চলমান দেখা যায়নি।এতে নিখোঁজ চালকের স্বজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বুধবার দুপুর ১টার দিকে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাটে কথা হয়  ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর অঞ্চলের পরিদর্শক মো. তানভির হোসেনের সঙ্গে। তিনি  জানান, আমাদের উদ্ধারকর্মীরা নিখোঁজ চালকের সন্ধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। এত বড় নদীতে আমরা অনুমানে তাকে আর কোথায় খুঁজব। দুঃখজনক হলেও আমরা এখন কাছাকাছি কোথাও তার ভেসে ওঠা লাশের অপেক্ষায় আছি।

এদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই ঢাকা হতে দৌলতদিয়া ঘাটে ছুটে আসেন নিখোঁজ চালকের বড় ভাই ফারুক চৌধুরী, সেজ ভাই শাহিন চৌধুরী, ভাতিজা রিপন চৌধুরী, শ্যালক হুমায়ুন কবির, ইকবাল হোসেন খোকন,ভাস্তি জামাই নিজাম হোসেন ও বেয়াই শেখ বাচ্চু। মঙ্গলবার রাত থেকে ঘাটে অবস্থান করে তারাও সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে আলাপকালে মারুফের শ্যালক হুমায়ুন কবির কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা মারুফ ভাইকে জীবিত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু তার লাশটা অন্তত আমরা চাই। তার ৩টি কন্যা সন্তান, স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। আমার ভাগ্নিরা বলেছে- মামা, তোমরা আমাদের বাবারে ছাড়া বাসায় ফিরবা না। বলেন ভাই আমরা এখন কি করব। ফায়ার সার্ভিসেরও কোনো উদ্ধার তৎপরতা দেখছি না।