সাবেক এসপি বাবুল আকতারের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জেনে গিয়েছিলেন স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ নিয়ে দুজনের দাম্পত্য কলহ চলছিল। একপর্যায়ে বাবুল ও তার পরকীয় প্রেমিকা মিতুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
এসব অভিযোগ চট্টগ্রামে খুন হওয়া মাহমুদা খানম মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের।
বুধবার বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়েরের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মোশারফ হোসেনের দাবি, বাবুল আকতারের সঙ্গে এক এনজিও কর্মীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঝগড়া হয়। মৃত্যুর আগে মিতু বিষয়টি তাদের জানিয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তারা বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফল হননি। একপর্যায়ে বাবুল ও ওই নারী মিতুকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মিতুর বাবা বলেন, মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি সাতজনের নাম আগের মামলায় পুলিশের তদন্তে এসেছিল। আসামিরা হলেন বাবুল আক্তার, কামরুল সিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ আনোয়ার, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ সাজু ও মোহাম্মদ কালু।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, বাবুলের পরিকল্পনায় আসামিরা তার মেয়েকে হত্যা করেন। ২০১৩ সালে বাবুল যখন কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তখন এনজিওর এক মাঠকর্মীর সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। বিষয়টি মিতু জেনে যাওয়ায় ঝগড়া হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর মোশাররফ হোসেনের বাসায় ছিলেন বাবুল। তাহলে মামলা করতে দেরি কেন করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মিতুর বাবা বলেন, বাবুলের বিষয়ে তিনি পরে নিশ্চিত হয়েছেন। একই ঘটনায় দুটি মামলা হয় না। পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরে তিনি মামলা করেছেন।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই চিঠি দিয়েছে। আমরা মামলাটি পিবিআইকে দিয়ে দিচ্ছি।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম ওরফে মিতুকে।
ওই ঘটনায় বাদী হয়ে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তাতে তিনি বলেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন। তবে সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় মাহমুদা হত্যার তদন্ত নতুন মোড় নেয়। অব্যাহতভাবে মাহমুদার মা–বাবা এই হত্যার জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করে আসছেন।
পিবিআই আজ জানায় মিত্যু হত্যায় বাবুল জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরপরই আগের মামলার চার্জশিট ও নতুন করে মামলা দায়ের হলো।