অন্যান্য সময়ের তুলনায় রোজায় ঘুমের সমস্যা ও কম ঘুম হয়ে থাকে। আর শরীর সুস্থ রাখতে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অনেক।
সারাদিন রোজা রাখার কারণে ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্তই সবাই খাওয়ার সময় পান। এ কারণে অতিরিক্ত খেলে রাতে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়াও রোজার সময় রাতের প্রথমাংশে ঘুমালে আবার সাহরিতে ওঠার কারণে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। সব মিলিয়ে রোজার সময় ঘুমের সমস্যায় সবাইকেই কমবেশি ভুগতে হয়।
ঘুম কম হলে বা ঘুমের সাইকেলে ব্যঘাত ঘটলে, মস্তিষ্ক দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়। এর ফলে কাজে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া যায় না, কোনো সমস্যার সমাধান করতে অসুবিধা হয়, ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি হয়, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, সৃষ্টিশীল কাজ করা যায় না।
সব মিলিয়ে শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয়। জেনে নিন রোজায় ঘুমের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে যা করবেন-
>> রোজায় ঘুমের জন্য তিনটি ভিন্ন সময় নির্ধারণ করুন। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাবেন এবং জেগে উঠবেন।
>> তারাবির নামাজ শেষ করেই রাতের খাবার খেয়ে নিন। রাত ১১টার মধ্যে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিন। যাতে সাহরি পর্যন্ত অন্তত ৪ ঘন্টা ঘুমাতে পারেন।
>> আবার সাহরির সময় অর্থাৎ সাড়ে ৩টার দিকে ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। তারপর সাহরি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে ভোর ৫টার মধ্যে আবার ঘুমিয়ে ৭-৮টার দিকে উঠে পড়তে পারেন।
>> লকডাউনের কারণে অনেকেই হয়তো হোম অফিস করছেন। সেক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে দুপুরে কিংবা বিকেলে ২০-৩০ মিনিট পাওয়ার ন্যাপ নিতে পারেন। ফলে সারাদিনের ঘুমের চাহিদা সহজেই পূরণ হয়ে যাবে।
>> শারীরিক এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য রোজার সময় গভীর ঘুম নিশ্চিত হওয়াও জরুরি। তাই ঘুমের পরিবেশ ঠিক রাখুন। মেলাটোনিন হরমোন আমাদের ঘুম আসতে সাহায্য করে। এই হরমোন অন্ধকারে নিঃসরণ হয়।
>> এ ছাড়াও ঘুমের সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি দূরে রাখবেন। মোবাইল, ল্যাপটপ এসব চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব যন্ত্র থেকে বিচ্ছুরিত আলো ঘুম নষ্ট করে।
>> ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত মিষ্টি এবং ঝালজাতীয় খাবার খেলে রাতের ঘুমে সমস্যা হয়। কারণ এ ধরনের খাবার থেকে পেটে গ্যাস হয় এবং বুক জ্বালা করে।
>> রোজার সময় চা বা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ চা বা কফি খাওয়ার পর এগুলোতে থাকা ক্যাফেইনের প্রভাব শরীরে প্রায় ৭ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে। যা অনিদ্রার কারণ।
>> খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না। অন্তত ২ ঘণ্টা সময় দিন খাবার হজম হতে।
>> ইফতার থেকে শুরু করে সাহরি পর্যন্ত বারবার পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন হলে মাথাব্যথা, মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে গিয়ে ঘুমের সমস্যা হয়।
>> রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত ১০ মিনিট মেডিটেশন করলে গভীর ঘুম হয়।