পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ছয় তলা ভবনে রাসায়নিকের গোডাউনে লাগা আগুনে দগ্ধ চারজন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় রাখা হয়েছে লাইফ সাপোর্টে। আইসিইউতে থাকা বাকি দুজনের অবস্থাও ‘ক্রিটিক্যাল’।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন, আগুনে দগ্ধ ২১ জন রোগী বার্ন ইউনিটে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর ২০ জনকে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে আইসিইউতে রাখা হয়। এই চারজনের মধ্যে দুজন লাইফ সাপোর্টে আছে। বাকি দুজনও শঙ্কামুক্ত নয়।

ডা. সেন আরও বলেন, ভর্তি রোগীদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তাদের কেউ যে বিপদমুক্ত কিংবা ঝুঁকিমুক্ত তা বলা যাবে না। কারণ এই বার্নটা বাইরে থেকে দেখা যায় না। হঠাৎ রোগীরা খারাপ হয়ে যেতে পারে। আরও সাত-আট দিন পরে রোগীদের শারীরিক অবস্থা বোঝা যাবে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, আজকেও আমি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি- তারা কেউ কেউ জানিয়েছে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, কথা বলতে গেলে আটকে আসছে এবং কাশি হচ্ছে। তাদেরকে এখনই ঝুঁকিমুক্ত না বলে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রাখছি। আইসিইউয়ের দুজন সবচেয়ে বেশি ক্রিটিক্যাল, বাকি রোগীরাও ক্রিটিক্যাল।

ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া ১৬ জন রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো। তবে খুব বেশিও ভালো না। তাদের কয়েকদিন অবজারভেশনে রাখতে হবে। অন্তত সপ্তাহ খানেক না গেলে কিছু বোঝা যাবে না।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জের বিস্ফোরণের ঘটনায় ভর্তি ৬ জনের মধ্যে একজন আইসিইউতে আছেন। যার শরীরের অধিকাংশই পুড়ে গেছে তার অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেছেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলার হাজি মুসা ম্যানসনে কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের প্রায় ছয় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় শুক্রবার সকাল ৯টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।