স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম মহামারি করোনা যুদ্ধ মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন, আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান, আমাদেরকে সাহস দিন, আমাদেরকে পথ দেখান, ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিন, কাজগুলোকে সমালোচনা করুন কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে উজ্জীবিত করুন।

তিনি বলেন, আপনাদের একটা লাইন- যেদিন একটা প্রশংসাসূচক বাক্য দেখি সেদিন আমাদের কাজের মুডই পাল্টে যায়। আপনাদের ভূমিকা আমাদের মনের ওপর কতখানি ছাপ ফেলে তা অনেকে মুখে বলবে না কিন্তু আমি মুখে ও অন্তর থেকে বলছি, একজন সাংবাদিক যখন আমাদের কাজের প্রশংসা করেন তখন আমরা দারুণভাবে উজ্জীবিত হই, বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত করোনা সম্পর্কিত জুম কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন। জুম কনফারেন্সে তিনি সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দেন।

বসুন্ধরায় আইসোলেশন সেন্টার উধাও হয়েছে- এমন সংবাদের ‘উধাও’ শব্দ নিয়ে আপত্তি করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। সেন্টারটি না থাকার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, যে পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করা হয়েছিল, তা বিদ্যমান ছিল না। সেখানে যেসব চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ছিল, তা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেন্টারটি চালাতে মাসে ৬০ লাখের বেশি টাকা খরচ হত। ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি রোগী থাকত না। হাজারের বেশি জনবল ছিল, যাদের পেছনেও খরচ ছিল। পরবর্তী পরিপ্রেক্ষিতে সেন্টারটির প্রয়োজন না থাকায় তা সরিয়ে দেয়া হয়।

ডিএনসিসির মহাখালীর মার্কেটে করোনা হাসপাতাল নিয়ে সমালোচনার জবাবে মহাপরিচালক বলেন, সেখানে আগামী সপ্তাহে ২০০ শয্যার আইসিইউ চালু হবে। এই হাসপাতালে মোট ১ হাজার ১৫০ শয্যার চিকিৎসা ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কোনো অভিনন্দন না পাওয়ায় আক্ষেপ করেন। এছাড়া জানান, গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৩ হাজার ৬৩৮টি শয্যা তৈরি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ওষুধাগারে অনেক কিছু ফেলে রাখা হয়েছে- এমন সমালোচনার জবাবে আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ভাণ্ডারে মানুষ সব জমা রাখে। সেখানে প্রয়োজনীয় জিনিস জমা রাখা হয়েছে কিন্তু তা পড়ে থাকা না। চাহিদা অনুযায়ী তা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ৩০০ আইসিইউ বেড পড়ে আছে? ব্যাপারটা তা না। এই বেড চাহিদা অনুযায়ী দেয়া হবে। বেড দেয়া হলেই চিকিৎসা হবে না। যেখান দেয়া হবে, সেখানে প্রয়োজনীয় সাপোর্টটাও দিতে হবে। এই ৩০০ বেড থেকেই ডিএনসিসির ২০০ আইসিইউ শয্যা করা হয়েছে।

জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদি মাসের পর মাস বিমানবন্দরে পড়ে আছে- এমন সংবাদের সমালোচনার জবাবে অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, আইনগত ও সরকারের বিধিবিধান পালনের বাধ্যবাধকতার কিছু জটিলতা ছিল। কিন্তু তা কেটেছে। ১০ মাসে বিমানবন্দর থেকে কেন ছাড়ানো গেল না- এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আবারও প্রশ্ন করা হলে বলেন, আইনি জটিলতায় আটকে ছিল এবং আইনকে নিজের গতিতে চলতে দিতে হয়। তবে তা নিরসন হয়েছে।