রোজার প্রথমদিনেই অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে শসার। একদিনে দ্বিগুণ দাম বেড়ে শসার কেজি প্রায় একশ টাকা হয়ে গেছে। এর সঙ্গে পাকা টমেটো ও বেগুনের দামও বেড়ে গেছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোজায় শসা, পাকা টমেটো ও বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও এবার এর ব্যতিক্রম হয়নি।

তারা জানান, একদিকে রোজা অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে বুধবার আড়তে শসা, টমেটো ও বেগুনের দাম বেড়ে গেছে। গতকালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দাম দিয়ে এই পণ্যগুলো কিনতে হয়েছে।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকালে খিলগাঁও তালতলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা শসার কেজি বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, যা গতকাল ছিল ৪০ টাকার মধ্যে। গতকাল ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। আর ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারটির ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, রোজায় শসা, পাকা টমেটো ও বেগুনের দাম বাড়বে এটা স্বাভাবিক বিষয়। প্রতিবছরই প্রথম রোজায় এই পণ্যগুলোর দাম বাড়ে। এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর বিধি-নিষেধ দিয়েছে। যে কারণে আড়তে মাল কম এসেছে। সবকিছু মিলে দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, গতকাল শসার কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করেছিলাম। বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা কেজি। টমেটো ৩০ টাকা কেজি। আমাদের ধারণা ছিল আজ শসার কেজি ৬০ টাকা হতে পারে। কিন্তু আমাদেরই কেনা পড়েছে ৬০ টাকার ওপরে।

খিলগাঁও তালতলা বাজার থেকে মালিবাগ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা শসার কেজি বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং পাকা টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারটির ব্যবসায়ী আয়নাল মিয়া বলেন, রোজার কারণে আজ শসা, টমেটো ও বেগুনের দাম বেড়েছে। বাজারে যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগই এই তিনটি পণ্য কিনছেন। এর মধ্যে শসার চাহিদা একটু বেশি। এ কারণে শসার দাম বেশি হারে বেড়েছে। আমাদের ধারণা দুই-একদিনের মধ্যে শসার দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে বেগুন ও টমেটোর দাম কমার সম্ভাবনা কম।

রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। পাকা টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দাম চাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজারটির ব্যবসায়ী মো. মিঠু বলেন, রোজার প্রথম দিন শসা, টমেটো, বেগুন খেতে হলে দাম একটু বেশি দিতেই হবে। কম দামে খেতে হলে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। দুই-চারদিন পর হয় শসার দাম একটু কমতে পারে। তবে টমেটোর দাম কমার সম্ভাবনা কম। কারণ বাজারে এমনিতেই টমেটোর সরবরাহ কমে আসছে।

রামপুরা বাজারে শসা কিনতে যাওয়া মামুন বিশ্বাস বলেন, দুদিন আগে শসা কিনেছি ৩০ টাকা কেজি। আজ বাজারে এসে দেখি ব্যবসায়ীরা ৯০ টাকা দাম চাচ্ছেন। দামাদামি করে ৮০ টাকা কেজি দরে আধাকেজি শসা কিনলাম।

তিনি বলেন, প্রতিবছর রোজার শুরুতে শসা, টমেটো ও বেগুনের দাম বাড়ে। করোনা মহামারির মধ্যেও এবার এর ব্যতিক্রম হলো না। অথচ রোজার আগে সবাই বড় বড় কথা বলে পণ্যের দাম বাড়বে না। বাস্তবতা হলো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না। সব চাপ এসে পড়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ওপর।

রামপুরা মোল্লাবাড়ি বাজার থেকে ৭০ টাকা কেজি শসা কেনা শিমুল আকতার বলেন, গতকালও শসার কেজি ৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আজ কী এমন হয়ে গেল শসার কেজি ৭০ টাকা হয়ে যাবে। আসলে রোজাকে হাতিয়ার করে ব্যবসায়ীরা মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে।