টানা দুই কার্যদিবস বড় দরপতনের পর সোমবার (১২ এপ্রিল) লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। প্রথম ১০ মিনিটের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে গেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৬৬ কোম্পানির শেয়ার দামের সর্বনিম্ন সীমা বা ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়।
এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রভাবে শেয়ারবাজারে টানা দুই কার্যদিবস বড় দরপতন হয়। এতে দুই কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১৭৩ পয়েন্ট কমে যায়।
শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা দেয়ায় শনিবার ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়া ৬৬ কোম্পানির বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এই ৬৬ কোম্পানির শেয়ার দাম একদিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে। বিপরীতে দাম বাড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সিদ্ধান্তও পতন আটকাতে পারেনি। রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ৯০ পয়েন্ট। তার আগে বৃহস্পতিবার কমে ৮২ পয়েন্ট।
শেয়ারবাজারের এই টানা বড় দরপতন যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতি ও রোববারের দরপতনের বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘নতুন করে লকডাউন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখে দিয়েছে। এর সঙ্গে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সব মিলে বিনিয়োগকারীদের প্যানিক সেলের কারণে শেয়ারবাজারে দরপতন দেখা দিয়েছে।’
এই শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমি মনে করি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দেয়া এই আতঙ্ক যুক্তি সংগত না। কারণ বিএসইসি থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে লকডাউনে ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে। আর ব্যাংক বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে গ্রাহকের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় আজ থেকে ব্যাংকের লেনদেন সময় আধাঘণ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সিদ্ধান্তের পর রোববার রাতেই বিএসইসি থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ব্যাংক লেনদেনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শেয়ারবাজারেও আধাঘণ্টা বেশি লেনদেন হবে।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। ফলে প্রথম ১০ মিনিটের লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স-এ ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়ছে।
লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫২ পয়েন্টে বেড়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১২ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ২৮ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দামবৃদ্ধির তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির। আর ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭৭ কোটি ৬৭ টাকা।
আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৬ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৬২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯টির, কমেছে ১২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির।