নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি নেতাদের ‘টপ টু বটম’ দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৩১ মার্চ) ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের পদত্যাগের আহ্বান বিএনপির অগণতান্ত্রিক আচরণ। বিএনপির এই আহ্বান হাস্যকর। জনগণ নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, সুতরাং মেয়াদ শেষ হলেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এখানে পদত্যাগের বিষয় তো নেই। আমি তো মনে করি, নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি নেতাদের ‘টপ টু বটম’ দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত।
‘নিরপেক্ষ বলতে শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নেই’ বিএনপি নেত্রীর একথা জনগণ নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিজেদের জনবিচ্ছিন্নতা আড়াল করতে বিএনপি এখন সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।
সরকার পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে— বিএনপি মহাসচিবের এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। বিচার বিভাগের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। বরং বিএনপির কাছে নিরপেক্ষতা হচ্ছে, তাদের পক্ষে রায় গেলে বিচার বিভাগ স্বাধীন, আর বিপক্ষে গেলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন জয়ের গ্যারান্টি দিলেই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার ও মনগড়া কথা বলে যাচ্ছে অবিরাম। অথচ তারাই পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
গত চার দশক পার হলেও বিএনপির রাজনীতি থেকে সন্ত্রাস নির্ভরতা একটুও কমেনি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের রাজনীতি যারা করে আসছে, তাদের কাছে জনস্বার্থের চেয়ে ক্ষমতাভোগই অধিকতর কাঙ্ক্ষিত। ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার মোহে বিএনপি এখন অন্ধ।
যারা ভারত সফর শেষ করে বিমানবন্দরে এসে বলে গঙ্গার পানি বণ্টনের কথা বলতে ভুলে গেছে, তাদের মুখে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কথা মানায় না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে সহযোগিতা না করে ভারত বিরোধিতার ভোঁতা অস্ত্রে শান দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত কয়েক দিনে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডবলীলা চালানো হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে বিএনপি নেতারা বলেছেন, এর সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। তাদের এ কথা শুনলে হাসি পায়, ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।
তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এসকল সন্ত্রাসী কার্যকলাপের উস্কানি ও প্রশ্রয় দিচ্ছে। জনগণের সম্পদে আগুন ধরিয়ে দেয়ার নির্দেশদাতা হয়ে আবার সমাবেশও করে। বিএনপির মায়া কান্না মাছের পুত্র শোকের মতো।
এ সময় বিএনপিকে সরকারের অন্ধ সমালোচনা না করে করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং জনগণকেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্ধুদ্ধ করুন। এটাই দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব।