হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল প্রতিহত করতে লাঠিসোটা নিয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

রোববার (২৮ মার্চ) সকালে রায়েরবাগ, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। তবে ওই এলাকার কোথাও হেফাজতের নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে আজ (রোববার) হরতাল পালন করছে হেফাজতে ইসলাম।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের খানবাড়ি যাওয়ার রাস্তার মোড়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে লাঠিসোটা নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।

একইভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বসে ছিলেন যাত্রাবাড়ী আড়ৎ এলাকায়ও। এছাড়া সোয়া ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার দক্ষিণ পাশে শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদের জড়ো হয়ে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এর কিছুক্ষণ পর সায়েদাবাদের দিক থেকে লাঠিসোটাসহ একটি মিছিল যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার দিতে যেতে দেখা যায়। মিছিল থেকে শ্লোগান দেয়া হচ্ছিল, ‘হরতাল মানি না’।

যাত্রবাড়ীর কুতুবখালী এলাকায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া মাদরাসা এলাকায় সকাল ১০টার দিকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা গেছে। বিশ্বরোড থেকে মাদরাসা সড়কের প্রবেশ মুখে স্বল্প সংখ্যক পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

এছাড়া যাত্রাবাড়ী মোড়েও ছিল অল্প সংখ্যক পুলিশ। তারা চৌরাস্তার পূর্ব দিকে টুল পেতে বসে ছিলেন।

তবে হরতালের কারণে গাড়ি চলাচল ছিল অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম। যাত্রী ছিল আরও কম। যেসব বাস চলাচল করছে সেগুলোতেও ছিল যাত্রী সংকট। রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম বাস চলাচল করতে দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে মিরপুর রুটে চালাচলকারী শিকড় পরিবহন, গাবতলী রুটে চলাচলকারী গাবতলী পরিবহন ও বিআরটিসির বাসগুলোকে যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কোনো স্থানেই সড়কে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়নি। যানবাহনের সংখ্যা কম হওয়ায় অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যান চলাচল করতে দেখা গেছে।

হরতাল কর্মসূচি বাস্তবায়ন মনিটরিং টিমের সদস্য ও হেফাজতের নেতা মাওলানা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সারাদেশ থেকে খবর আসছে, বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। কিছু কিছু জায়গায় সরকার দলীয় লোকজন, প্রশাসন বাধা প্রদান করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। গুলি করছে, আহত করছে। এরপরও আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলায় নেই। ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াওতে নেই, শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছেন আমাদের নেতাকর্মীরা।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঢাকা বা আশপাশের এলাকা থেকে কোনো গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ব্রাহ্মণবড়িয়া, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ- এসব এলাকা থেকে গ্রেফতার ও গুলির সংবাদ আমাদের কাছে আসছে।’