ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের সিপিইউ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মুশতাক আটকের সময় আলামত হিসেবে এগুলো জব্দকরা হয়েছিল।

বুধবার (১০ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে এ আবেদন করেন মুশতাকের স্ত্রী মাছিহা আক্তার। আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে মালিকানা যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

আবেদনে মাছিহা আক্তার বলেন, ‘মুশতাক মারা যাওয়ায় মামলা চলার সুযোগ নেই। তার মালিকানাধীন একটি রেডমি-৫ মোবাইল ও একটি অ্যাপলের সিপিইউ জব্দকৃত আলামত আর মামলার এভিডেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। সেহেতু জব্দকৃত আলামতসমূহ আমার জিম্মায় প্রদান করা একান্ত আবশ্যক।’

এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবেদন দাখিল করেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন।

প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আদালতের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো যাচ্ছে, ২০২০ সালের ৬ মে ঢাকা সিএমএম আদালত হতে সরাসরি মুশতাক আহমেদকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট অবস্থানের জন্য কারাগার বদলি (কাশিমপুর কারাগারে) পাওয়া যায়। গত বৃহস্পতিবার ‘সাডেন আনকনশাসনেস’র (হঠাৎ অচেতন হওয়া) কারণে কারা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ৭টা ২০ মিনিটে জরুরিভিত্তিতে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মুশতাককে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাত ৮টা ২০ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় গাজীপুর মহানগর (জিএমপি) সদর থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয় (মামলা নম্বর-১৩)। পরের দিন ১২টা ২৫ মিনিটে মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মুশতাকের চাচাতো ভাই নাফিসুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতারের পর প্রায় ১০ মাস ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ। সেখান বন্দি অবস্থায় ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তার মৃত্যু হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।